দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় ফরিদপুরের দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা হয়েছে।
বরকত ছিলেন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আর রুবেল ছিলেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি। গ্রেপ্তারের পর দুই জনকেই পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
দুই ভাই আগে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তারা ক্ষমতাসীন দলে ভেড়েন। আর এক দশকে ধনকুবের বনে যান।
বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস এই অভিযোগপত্র জমা দেন।
আদালতে কাফরুল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রনপ কুমার এই তথ্য নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৬ জুন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ এই মামলা করেন।
এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে এ বছর পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। ২৩টি বাস, ট্রাকসহ বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়েছেন। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন।
রাজবাড়ীতে ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর এক আইনজীবী খুন হন। সে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন এই দুই ভাই।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত ১৮ জুন মিরাজ আল মাহমুদ এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে এই দুই ভাই অন্তত দুই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
এই মামলায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমি, ৫৫ গাড়ি জব্দের আদেশ দেয় আদালত। গাড়ির মধ্যে রয়েছে, বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, নিজেদের ব্যবহৃত প্রাইভেটকার। পাশাপাশি ব্যাংকে থাকা ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকাও জব্দের আদেশ দেয়া হয়েছে।
এই দুই ভাই আগে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের হাত ধরে তারা আওয়ামী লীগে আসেন।
রাজবাড়ীতে ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর এক আইনজীবী খুন হন। সে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন এই দুই ভাই।
গত বছরের ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হন ফরিদপুরে ত্রাস হয়ে উঠা দুই ভাই।
হামলার দুই দিন পর ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।
এরপর ৭ জুন রুবেল-বরকতসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।