৪০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুদকের বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির বিরুদ্ধে বাকি ছয় সাক্ষীর কেউ সাক্ষ্য দিতে আসেননি।
বুধবার মিজান ও বাছিরকে জেলখানা থেকে আদালতে হাজির করা হলেও আসেননি কোনো সাক্ষী। পরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম ৫ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ দেন।
মামলাটিতে মোট ১৭ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
গত ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়। গত বছর ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ।
পরে আদালত চার্জ গঠনের তারিখ রেখে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ বদলি করা হয়। গত বছরের ১৮ মার্চ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
ডিআইজি মিজান প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৮ সালে, এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন করে। এরপর নানা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
ঘটনার চার মাস পর মিজানের সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক। এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।
অনুসন্ধানের মধ্যেই ২০১৯ সালের ৮ জুন ডিআইজি মিজান বোমা ফাটানো তথ্য দেন। বলেন, তার কাছ থেকে ৪০ টাকা ঘুষ নিয়েছেন দুদকের বাছির। প্রমাণ হিসেবে কয়েকটি অডিও ক্লিপও হাজির করেন তিনি।
বাছির এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানান, এসব অভিযোগ বানোয়াট, কণ্ঠ নকল করে বানানো হয়েছে এসব রেকর্ড।
ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে নিজ নিজ চাকরি থেকে বরখাস্ত হন মিজান-বাছির। সেই সঙ্গে দেশ ত্যাগে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দুদক, যার প্রধান করা হয় ফানাফিল্যাকে।
মিজান-বাছিরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পায় দুদকের কমিটি। ফানাফিল্যাকেই বাদী দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে দুদক।
এরপর গত বছরের ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে। অপরদিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার ডিআইজি মিজানকে এই মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।