বিএনপির সহিংস আন্দোলনের কারণে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা সমাবেশ এলাকায় ভয়ে সেবা বন্ধ রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির নবনির্বাচিত সদস্যদের পরিচিতি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন, সমাবেশ, মিছিল, মানববন্ধন মানেই হচ্ছে সহিংসতা আর সন্ত্রাস। জনগণ তাদের কর্মসূচিতে এখন ভীতসন্ত্রস্ত।
‘বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করলে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা বাস পোড়ানোর ভয়ে সেবা বন্ধ করে দেয়। অথচ বিএনপি দায় চাপায় সরকারের ওপর। আন্দোলন এবং নির্বাচনে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর বিএনপি এখন পুলিশকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।’
২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনায় বিএনপির সমাবেশের আগের দিন বিভাগীয় শহর থেকে ১৮টি রুটে বন্ধ হয়ে যায় বাস। সমাবেশের দিন চলেনি নগর পরিবহনও।
৯ দিনের ব্যবধানে রাজশাহীর সমাবেশ ঘিরেও দেখা গেছে একই চিত্র। সেখানেও আগের দিন কোনো ঘোষণা ছাড়াই কর্মবিরতিতে যান পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।
দুটি মহানগরেই ধর্মঘটের দিন বিএনপির সমাবেশ থাকায় দলটি অভিযোগ করছে, বাসমালিকদের এ কর্মসূচির পেছনে সরকারের হাত আছে। তারা চাইছে না বিএনপির নেতা-কর্মীরা এসে বড় সমাবেশ করুক।
উপকমিটির পরিচিতি অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির নেতিবাচক ও অপরাজনীতিতে দেশের চলমান উন্নয়নধারাই শুধু বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের বিকাশধারা।’
নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘উপকমিটিতে নাম লিখিয়ে কেউ চাঁদাবাজি বা ক্ষমতার দাপট দেখালে সঙ্গে সঙ্গে কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘জন্মলগ্ন থেকে বিএনপি গণতন্ত্রের মুখোশের আড়ালে গণতন্ত্র হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে। তারা এখনও সেই ধারাবাহিকতাই চর্চা করে চলেছে।
‘জনগণ আশা করেছিল, নির্বাচন ও আন্দোলনে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে তোষণ ও পোষণ করা ত্যাগ করবে। কিন্তু তারা তা না করে উল্টো গাঁটছড়া বেঁধে আছে। স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে সখ্যতা রেখে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের সঙ্গে রসিকতা আর তামাশা ছাড়া কিছু নয়।’
এ সময় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। গণমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত যে খবর প্রচার হয়েছে, তা সত্য নয়। আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমনকি আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী কোনো সভায়ও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
‘বিএনপি ইউপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা দেওয়ার পরও স্থানীয়ভাবে তাদের দল সমর্থিত প্রার্থীদের প্রস্তুতি নেয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে।’