পুলিশ হেফাজতে বরিশালে শিক্ষানবিশ এক আইনজীবীর মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি হেফাজতে বরিশাল জজ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা ইউনুস মুন্সির করা আবেদন শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন বিচারকেরা।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
পরে শিশির মনির সাংবাদিকদের জানান, গত ২৯ ডিসেম্বর রাত ৮টায় রেজাউল করিমকে তিনজন সাদাপোশাকধারী পুলিশ ধরে তার পিতার সামনে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরদিন তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
‘কোর্ট হাজতে থাকাকালীন রেজাউল করিম তার ভাইকে জানায়, তাকে সারা রাত এসআই মহিউদ্দিনসহ আরও দুজন ডিবি পুলিশ রুলার দিয়ে পেটায়। অমানুষিক নির্যাতনে সে সেখানেই পায়খানা-প্রশ্রাব করে দেয়। সারা রাত তাকে কোনো খাবার দেয়া হয়নি। রেজাউল তার ভাইকে বলেছিল, বাবা-মাকে দোয়া করতে বলিও, আমি বাঁচব না।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী জানান, রেজাউলকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। সেখানে সে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তার বাবা ইউনুস মুন্সিকে জানায়। তখন পরিবারের সদস্যরা গিয়ে দেখেন যে, আঘাতের কারণে তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। পরদিন ১ জানুয়ারি রাত ১২টায় হাসপাতালেই রেজাউলের মৃত্যু হয়।
রেজাউলের বাবা ইউনুস মুন্সির বরাতে আইনজীবী আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে অস্বীকার করে। তখন তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করলে আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন রেজাউলের বাবা ইউনুস মুন্সি।