বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দি যেতে চান মোদি

  •    
  • ৩ মার্চ, ২০২১ ১২:৫১

ওড়াকান্দির পার্শ্ববর্তী ঘৃতকান্দি মন্দির কমিটির সেক্রেটারি ও সীতারামপুর হাই স্কুলের শিক্ষক বিকাশ কুমার বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মোদির সফর উপলক্ষে গত শুক্রবার ভারতীয় হাইকমিশনের ৯ জনের একটি দল ওড়াকান্দি ঘুরে গেছে। এরপর থেকেই স্থানীয় প্রশাসনের আনাগোনা ও দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২৭ মার্চ ওড়াকান্দি আসতে চান।’

এবারের বাংলাদেশ সফরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও ওড়াকান্দি, বরিশালের শিকারপুরের সুগন্ধা সতীপীঠ, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ও ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার দৌলতপুরের রিশখালি যেতে চান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

২৯ জানুয়াারি পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের দিল্লি সফরের সময় মোদি ওই সব জায়গায় ভ্রমণের আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের বাংলাদেশ সফরের সময় মোদির ইচ্ছাপূরণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দিল্লির বাংলাদেশ মিশন বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৈতৃক বাড়ি দেখতে যেতে চান মোদি। এ সফরে বিশ্বের নানা স্থানে বসবাসরত পাঁচ কোটি মতুয়ার তীর্থস্থান গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিও ঘুরে আসতে চান তিনি।

একই সঙ্গে বরিশালের শিকারপুরে সতীপীঠ হিসেবে পরিচিত সুগন্ধা শক্তিপীঠ, কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি এবং ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে বাঘা যতীনের বসতবাড়ি দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

১৮১২ (মতান্তরে ১৮১১) সালের ১১ মার্চ ওড়াকান্দিতে জন্ম মতুয়া ধর্মমতের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুরের। তার বাণী ও নির্দেশাবলি গোটা বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিল ছেলে গুরুচাঁদ ঠাকুরের মাধ্যমে। প্রত্যন্ত এ গ্রামে একটি মন্দির রয়েছে, যা মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছে সর্বোচ্চ মর্যাদার তীর্থস্থান হিসেবে গণ্য হয়। মোদি সেখানে গিয়ে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদকে প্রণাম করতে চান।

মঙ্গলবার আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের আর কোনো প্রধানমন্ত্রী সেখানে যাননি। যদিও অবকাঠামোগত কিছু অসুবিধা থাকায় শেষ পর্যন্ত মোদি সেখানে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছে না। তবে বিজেপি সূত্রের দাবি, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ওড়াকান্দি সফরে মোদির সঙ্গে থাকতে পারেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী সত্যিই এ কাজটি করলে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মতুয়া সম্প্রদায়ের পাঁচ কোটি মানুষের কাছে আপন হয়ে উঠবেন তিনি। এরপরে সেখানে দাঁড়িয়ে উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে যাওয়া মতুয়া সম্প্রদায়কে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেয়ার মতো ঘোষণা যদি প্রধানমন্ত্রী দেন, সে ক্ষেত্রে জয়জয়কার পড়ে যাবে।

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দিল্লির বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভ্রমণ-ইচ্ছা পূরণে কোনো সমস্যা নেই কেবল ওড়াকান্দি ছাড়া। সেখানে একজন ভিভিআইপি পর্যায়ের কারও সফরের মতো অবকাঠামো নেই। কাছাকাছি কোনো হেলিপ্যাড বা হেলিপ্যাড করার মতো পরিস্থিতিও নেই। গ্রাম্য, ঘিঞ্জি সড়কে মোদির গাড়িবহর চালানোও প্রায় অসম্ভব।

তবে পশ্চিমবঙ্গের ভোটের রাজনীতির কথা বিবেচনায় মোদির সফরসূচি থেকে ওড়াকান্দি বাদ না দেয়ার জন্য দিল্লির পক্ষ থেকে ‘জোর দেয়া হচ্ছে’ বলে জানাচ্ছে ভারতের গণমাধ্যম।

ওড়াকান্দির পার্শ্ববর্তী ঘৃতকান্দি মন্দির কমিটির সেক্রেটারি ও সীতারামপুর হাই স্কুলের শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মোদির সফর উপলক্ষে গত শুক্রবার ভারতীয় হাইকমিশনের ৯ জনের একটি দল ওড়াকান্দি ঘুরে গেছে। এরপর থেকেই স্থানীয় প্রশাসনের আনাগোনা ও দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২৭ মার্চ ওড়াকান্দি আসতে চান।’

হরিচাঁদ ঠাকুরের প্রপৌত্র ও কাশিয়ানী উপজেলা চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর বলেন, ‘এরশাদ সাহেব প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ওড়াকান্দি তীর্থে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিরোধী দলের নেতা থাকার সময় ঠাকুরবাড়ি ভ্রমণ করেছেন।

‘এখন মোদির সফর ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীর লোক, এসএসএফ ও প্রশাসন নিয়মিত ভ্রমণ করছে। তারা হেলিপ্যাডের জায়গা খুঁজছে। ঠাকুরবাড়ি ও ঠাকুরবাড়ির ৫০০ গজের মধ্যে দুইটা মাঠ আছে। সেখানেই হেলিপ্যাড হবে।’

তবে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রথীন্দ্রনাথ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারতীয় দূতাবাসের অ্যাডভান্স টিম ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করেছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এ সফর সম্পর্কে কিছু জানি না। দূতাবাস রিপোর্ট দিলে এবং সরকারি নির্দেশনা পেলে সব প্রস্তুতি নেয়া হবে।’

এদিকে মোদির বাংলাদেশ সফর এগিয়ে নিতে ঢাকায় আসছেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মোদির সফর কর্মসূচি চূড়ান্ত করতেই তার এ সফর বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

মঙ্গলবার শাহরিয়ার আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২৬ মার্চ বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে।

‘তার সফর কর্মসূচি চূড়ান্ত ও এগিয়ে নিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফরে আসছেন। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানেই মোদির সব কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর