রাজধানীর গুলশানের বাড়ির বাইরে রাখা সেই দুই বোনের বাবা জগলুল ওয়াহিদের সঙ্গে আঞ্জু কাপুরের বিয়ের নথিসহ ম্যারেজ রেজিস্ট্রারকে তলব করেছে হাইকোর্ট।
আগামী ৮ মার্চ নথিসহ তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে দুই বোনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আঞ্জু কাপুরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আর সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, এ মামলাটি শুনানির জন্য ছিল। শুনানির একপর্যায়ে আঞ্জুর বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় স্পেশাল ম্যারেজ রেজিস্ট্রারকে তলব করা হয়েছে। আগামী ৮ মার্চ নথিসহ তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
এর আগে সোমবার এ মামলায় আদালতের নিয়োগ দেয়া চারজন অ্যামিকাস কিউরি তাদের মতামত পেশ করেন।
সংগীতশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই প্রয়াত মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফাকে তাদের বাড়িতে প্রবেশে বাধা দেয় তাদেরই সৎ মা দাবিদার আঞ্জু কাপুর। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে গত ২৬ অক্টোবর রাতে কোর্ট বসে স্বপ্রণোদিত হয়ে আদালত দুই বোনকে বাড়িতে প্রবেশ ও নিরাপত্তার আদেশ দেয়।
এ ছাড়া ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ওই বাসায় দুই বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়। একই দিনে গুলশান থানার ওসিসহ দুই বোন এবং ওই বাড়িতে থাকা আঞ্জু কাপুরকে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়।
এ আদেশের পর ওই রাতেই দুই বোন মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফাকে বাসায় উঠিয়ে দিয়ে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুলিশ। ৩ নভেম্বর তাদের আদালতে হাজিরও করা হয়।
পরে আদালত ওই বাড়ির দাবির পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আদালতে দাখিল করতে বলে ৩ ডিসেম্বর আদেশের পরবর্তী তারিখ ঠিক করে।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, গুলশান ২-এর ৯৫ নম্বর সড়কের ৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের বাড়ির মালিক মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ। গত ১০ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়।
মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ পাইলট ছিলেন। তার দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা কয়েক দিন ধরে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছেন না বলে ফটকের সামনে অবস্থান করছিলেন। দুই বোনের অভিযোগ, বাড়ির দখলে থাকা তাদের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবিদার আঞ্জু কাপুর তাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
বড় বোন মুশফেকা বলেন, ১৯৮৪ সালে তার বাবা গুলশানের এই বাসায়ই মাকে নিয়ে সংসার পেতেছিলেন। তাদের জন্ম ও শৈশবের বড় অংশও এই বাড়িতে কেটেছে। ২০০৫ সালে তাদের বাবা-মার বিচ্ছেদ হয়। পরে তারা কখনও মায়ের সঙ্গে, কখনও বাবার সঙ্গে থাকতেন।
মুশফেকা আরও বলেন, ২০১৩ সালে তিনি উচ্চতর লেখাপড়ার জন্য দেশ ছাড়েন। পরবর্তী ছয় বছর তিনি এই বাসায় অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ছোট বোন মোবাশ্বেরাও বিয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
তবে তারা বাবার খোঁজখবর রাখতেন। তাদের বাবা বলেছিলেন, আঞ্জু কাপুর নামের এক সেবিকা তাকে দেখাশোনা করছেন। পরে আঞ্জু নিজেকে তাদের বাবার স্ত্রী দাবি করেন। তিনি একাই এখন এই বাড়ির ভোগদখলে আছেন।