ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ঢেলে সাজানোর তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।
হাইকমিশনারের কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে সোমবার প্রকাশিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
ব্যাচেলেট লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে দ্রুততা, স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের তাগিদও দিয়েছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাবন্দি ছিলেন লেখক মুশতাক। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে তার মৃত্যু হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, মুশতাক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২ সদস্যের কমিটি করে গাজীপুর জেলা প্রশাসন।
লেখকের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া বক্তব্যে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (যার মাধ্যমে মুশতাককে অভিযুক্ত করা হয়েছে) ঢেলে সাজানো উচিত। একই সঙ্গে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চর্চার জন্য ওই আইনে আটক সবাইকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে।’
জাতিসংঘের হাইকমিশনার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের ওপর নির্যাতনের খবর নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্যাতনের অভিযোগের দ্রুত ও কার্যকর তদন্তের বাধ্যবাধকতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে কিশোরের নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন।
মুশতাক, কিশোর, দিদারসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গত বছরের মে মাসে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব। অন্য আট আসামি হলেন নেত্র নিউজের এডিটর-ইন-চিফ তাসনিম খলিল, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক শাহেদ আলম, জার্মানিপ্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, হাঙ্গেরিপ্রবাসী জুলকারনাইন সায়ের খান (সামি), আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ ও ফিলিপ শুমাখার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, এই ১১ জন দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জাতির জনক, মুক্তিযুদ্ধ, করোনাভাইরাস মহামারি সম্পর্কে গুজব রটিয়ে রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। এ ছাড়া তারা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে জনসাধারণের মধ্যে অস্থিরতা ও বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন।
মামলার পরপরই গ্রেপ্তার করে মুশতাক, কিশোর, দিদার ও মিনহাজকে কারাগারে পাঠানো হয়।