অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আড়াই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তৃতীয় দফা নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সোমবার সকাল ১০টায় হাজির হন খসরু। দুদকের প্রায় আড়াই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বের হন তিনি।ওই সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেন ডাকা হয়েছে, কী উদ্দেশ্যে ডাকা হয়েছে আপনারা (সাংবাদিকরা) বুঝে নিন।
‘আমি সাধারণ জীবনযাপন করছি, আমার ইন্টেগ্রিটি (সততা) নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ নেই।’
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ১ মার্চ উপস্থিত হতে আমীর খসরুকে তৃতীয় দফা নোটিশ পাঠানো হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি। নোটিশটি ইস্যু করেন দুদকের উপপরিচালক সেলিনা আক্তার।
দুদকের পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে জানান, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমির খসরুর সঙ্গে তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম ও ভাইরা গোলাম সরোয়ারকেও তলব করা হয়েছিল।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট অবৈধ লেনদেন, অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমির খসরুকে তলব করে নোটিশ দিয়েছিলেন দুদকের তৎকালীন পরিচালক কাজী শফিকুল।
ওই নোটিশে একই বছরের ২৮ আগস্ট তাকে দুদক কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছিল।
আমীর খসরুর বিরুদ্ধে বেনামে গুলশানে পাঁচ তারকা হোটেল শেরিনার মালিকানা, ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার এবং স্ত্রী, পরিবারের অন্য সদস্য ও নিজের নামে শেয়ার ক্রয়সহ জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়ার কথা নোটিশে বলা হয়েছিল।
ওই তলবে আমীর খসরু উপস্থিত না হওয়ায় একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর হাজির হতে আরেকটি নোটিশ পাঠায় দুদক। তিনি নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির না হয়ে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠান। হাইকোর্টে এই রিট ‘বিচারাধীন’ জানিয়ে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ না নিতে সেখানে অনুরোধ করা হয়।
পরে ১৬ সেপ্টেম্বর ওই রিট আবেদন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য তোলা হলে তা সরাসরি খারিজ করা হয়।
এরপরও আমীর খসরু দুদকে উপস্থিত হননি বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০১৯ সালের ৬ আগস্ট আমীর খসরু ও তার স্ত্রীকে সম্পদ বিবরণী দিতে আলাদা নোটিশ দিয়েছিল দুদক।
ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছিল, অনুসন্ধানে আমীর খসরুর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের বেশি নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের প্রমাণ মিলেছে।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর আমীর খসরু ও তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক।