বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাকস্বাধীনতার দাবিতে প্রতিরোধ সমাবেশ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি   
  • ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২১:১৫

রেহনুমা আহমেদ বলেন, ‘এত এত লেখক!  তারা আজ কোথায়? তারা কি কোনো প্রতিবাদ করবে না ? আজ নিজেকে লেখক পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে ৷ লেখক হিসেবে যদি আপনাদের আত্মসম্মান থাকে তাহলে আসেন, এই কাতারে যোগ দিন।’

বাকস্বাধীনতার দাবিতে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে প্রতিরোধ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ সমাবেশ থেকে গত শুক্রবার বামপন্থি ছাত্র সংগঠনের মশাল মিছিল থেকে আটক হওয়া সাত ছাত্রনেতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার শ্রমিকনেতা রুহুল আমিনের মুক্তি দাবি করা হয় ।

রোববার জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘বাকস্বাধীনতার দাবিতে বাংলাদেশ’ ব্যানারে এ প্রতিরোধ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ বলেন, ‘মুশতাকের মৃত্যুতে ভাষাহারা হতে হয়। আজ আমরা সবাই মুশতাক৷ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও যদি ভাষাহারা হতে হয়, একজন লেখককে প্রাণ হারাতে হয় তা হলে তা লজ্জাজনক।’

এ সময় তিনি মুশতাকের মৃত্যুতে লেখকরা প্রতিবাদ না করায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এত এত লেখক! তারা আজ কোথায়? তারা কি কোনো প্রতিবাদ করবে না ? আজ নিজেকে লেখক পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে ৷ লেখক হিসেবে যদি আপনাদের আত্মসম্মান থাকে তা হলে আসেন, এই কাতারে যোগ দিন।’

চলচ্চিত্র নির্মাতা কামার আহমেদ সাইমন বলেন, এটা ফেব্রুয়ারি মাস। সালাম, জব্বার, রফিক, তারপর কি আমরা মুশতাক লিখব? এটি আমার লিখতে ভয় হচ্ছে। কারও প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি শুধু বুঝতে পারি না এই স্বাধীনতার মানে কী ?

সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, স্বৈরাচারের পতন তখনই ঘটবে, যখন আমরা দলীয় সংকীর্ণতা অতিক্রম করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারব। এই সরকার ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আছে । কোনো অজুহাত দিয়ে ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকা বৈধ হতে পারে না। এই স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্তব্য।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, লুটেরা-দুর্নীতিবাজদের নিরাপত্তার জন্য এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হয়েছে। দুর্বৃত্ত ও লুটেরাদের রক্ষা করার জন্য সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ নিচ্ছে ৷ এসব অন্যায় জুলুমের বিরোদ্ধে আমাদের সংগঠিত হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই ৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘আমি আজ বিবেকের তাড়নায় এখানে উপস্থিত হয়েছি। জনগণ আজ ভীত ও শংকিত৷ কারণ তারা জানে না মুশতাক ঠিক কী কথা লিখেছিল এবং কোন অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । তার মৃত্যু কি হৃদরোগে হলো নাকি অন্য কারণে হলো এটি তদন্ত করে বের করা জরুরি।’

তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কয়েকটি বিশেষ অপরাধকে জামিন অযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অপমান, বঙ্গবন্ধুর অপমান, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

‘অথচ বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছেন, ‘আমি ফেরেশতাও নই, শয়তানও নই। আমি মানুষ। আমি ভুলত্রুটি করতে পারি।’ তা হলে তার সমালোচনা কেন করা যাবে না। তিনি নিজেই তো আত্মসমালোচনা করেছেন।’

এম এম আকাশ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলা হচ্ছে ! অথচ সংবিধানে রাষ্ট্র্রধর্ম ইসলাম করার মাধ্যমে তো আপনারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।

‘মুশতাকের মৃত্যুর তদন্ত করা দরকার আসলে কী ঘটেছে এবং সে অনুযায়ী যারা অপরাধী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। ডিজিটাল আইনের আবার পর্যালোচনা করা দরকার। এই আইনে জামিনের অযোগ্য ধারাগুলো পর্যালোচনা করে সংশোধন করা উচিত।’

ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত সহকারী সাধারণ সম্পাদক মেঘমল্লার বসুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফ মহিউদ্দিন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্য উর্বী জ্যোতি, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য হাসনাত কাইয়ুম, কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলমসহ আরও অনেকে।

এ বিভাগের আরো খবর