রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘ছাদ থেকে পড়ে’ মৌমিতা নামে তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিতোষ চন্দ্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার রাতে থানায় আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
‘পরিবার এখনও মামলা করেনি। মামলা করলে আমরা ফাইনাল ব্যবস্থা নিব।’
ওসি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, যাচাইবাছাইয়ের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার জন্য যাকেই জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হবে, তাকেই আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।’
এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের সময় মরদেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ।শনিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তিনি জানান, আঘাতের চিহ্ন দেখে দৃশ্যত উপর থেকে পড়ার কারণে মৃত্যু বলে মনে হয়েছে।
তিনি বলেন, ধর্ষণের আলামত আছে কি না, সেটা নির্ণয়ের জন্য তরুণীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। সেখান থেকে রিপোর্ট এলে ধর্ষণের বিষয়ে জানা যাবে।
সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘১৯ বছরের ওই তরুণীর মৃত্যু হত্যা নাকি আত্মহত্যাজনিত, সেটা বলা যাবে রিপোর্ট আসলে। আমরা ভিসেরা, ডিএনএ পাঠিয়েছি। সেই রিপোর্ট আসলে আমরা চূড়ান্ত মতামত দিতে পারব।
‘আমরা এখন শুধু এতটুকুই বলতে পারব, উপর থেকে পড়ার কারণে যে আঘাতগুলো হয়, সেই আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি।’
মৌমিতার ফুফা মোসাদ্দেক হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, বাড়িওয়ালার ছেলে মৌমিতাকে বিরক্ত করত।মোসাদ্দেক জানান, সপ্তাহখানেক আগে ওই ছেলের মায়ের কাছে বিচার দিলে তিনি কোনো সমাধান না করে বলেন, ‘আমার ছেলেকে ফ্রি লাইসেন্স দিছি। সে যা ইচ্ছা করবে। আপনারা আপনাদের মেয়েকে সামলে রাখেন। আর যা করার কইরেন।
‘আমাদের করার কিছু নাই। ছেলের মায়ের সঙ্গে মৌমিতার মায়ের এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। এই ঘটনায় আমরা তাকেই সন্দেহ করছি।’
তিনি আরও বলেন, তরুণীটি আনুমানিক বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ছাদে গিয়েছিল। ছয়টার দিকে বাড়ির পেছন থেকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রিকশায় ওঠালে মেয়ের মা তাকে দেখতে পায়। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মোসাদ্দেক বলেন, বাড়িওয়ালার ছেলে এবং আটক যুবকসহ চার থেকে পাঁচজন প্রতিদিন ওই বাসার ছাদে আড্ডা দিত। তারা বন্ধু। বাড়িওয়ালার ছেলে এখনও বাসাতেই আছে।
রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় শুক্রবার মালয়েশিয়ার একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রী মৌমিতাকে ছয়তলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া যায়।
রাত দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান নিউজবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেছিলেন, ‘রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার একটা অভিযোগ পেয়েছি।’
মৌমিতার ফুফা নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘আমার ভাগনি মালয়েশিয়ায় পড়াশোনা করত। করোনার মধ্যে সে দেশে আসে। এত দিন ধরে সে বাসায় (তৃতীয় তলায়) অবস্থান করছিল। বিকেলে সে ছাদে যায়। সাড়ে চারটার দিকে তাকে ফোন দিয়ে নিচে নামতে বলা হলে সে জানায় একটু পরে নামব।
‘সন্ধ্যায় জানতে পারি বিল্ডিংয়ের পেছন থেকে লোকজন তাকে উদ্ধার করে গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। ডাক্তার সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’