কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে মশাল মিছিলে হামলার প্রতিবাদ ও আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।মিছিলটি শাহবাগ হয়ে ফের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি জঘন্য আইন। আমরা এই আইনের বাতিল চাই। কথা বলা আমার অধিকার। আপনি আমার কণ্ঠরোধ করতে চাচ্ছেন। তার মানে আপনি সংবিধান লঙ্ঘন করছেন।’
শাহবাগে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও অন্যান্য বাম সংগঠনের মশাল মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা ও আটকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আজ সন্ধ্যার মধ্যে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দেয়া না হলে শাহবাগ থানায় যাব। এর মধ্যে কিছু হলে দায় অবশ্যই শাহবাগ থানা পুলিশকে নিতে হবে।’
সমাবেশ থেকে ছাত্র ফেডারেশনের নেতা জাহিদ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এর মধ্যে রয়েছে মুশতাক হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে আগামী ১ মার্চ সব প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও; ৩ মার্চ গণতন্ত্র ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ।
সমাবেশে সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের ২৫ নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাবন্দি ছিলেন লেখক মুশতাক। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে তার মৃত্যু হয়।
মুশতাককে হত্যার অভিযোগ এনে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও অন্য বাম সংগঠনের মশাল মিছিলে লাঠিপেটা করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এই হামলায় কয়েকজন আহত হন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের একাংশের সভাপতি আল কাদেরী জয় জানান, তারা মশাল মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে শাহবাগের দিকে এগিয়ে গেলে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নিয়ে আমাদের দিকে ছুড়ে মারে। বেধড়ক লাঠিচার্জ করা হয়। পেটাতে পেটাতে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদের সামনে নিয়ে আসে৷
‘এ সময় আমরা দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ আমাদের দিকে ইটপাটকেল ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেলও ছুড়েছে।’
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় বলেন, ‘পুলিশের অতর্কিত হামলায় আমাদের পাঁচ থেকে সাতজন আহত হন। তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
মশাল মিছিলে হামলা চালানোর সময় অন্তত চারজন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান দীলিপ।
মিছিলকারীদের ওপর কোনো হামলা হয়নি বলে দাবি করেন পুলিশের রমনা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান। তিনি বলেন, পুলিশই বরং হামলার শিকার হয়েছে।
আটকের বিষয়ে সাজ্জাদুর বলেন, ‘আমরা কাউকে এ পর্যন্ত আটক করিনি। হামলার সময় আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। হামলায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’