বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

র‌্যাব হেফাজতে কার্টুনিস্ট কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ

  •    
  • ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২০:৫৩

কার্টুনিস্ট কিশোর তার বড় ভাই আহসান কবিরের কাছে অভিযোগ করেছেন, গ্রেপ্তারের পর তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। জামিনে ছাড়া পাওয়া দিদারুল ইসলামও বলেছেন, কিশোরকে নির্যাতন করা হয়েছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় কারাগারে থাকা কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন তার বড় ভাই আহসান কবির।

একই অভিযোগ করেছেন এ মামলায় জামিন পাওয়া আসামি দিদারুল ইসলাম। কেরাণীগঞ্জ কারাগারে থাকা অবস্থায় কিশোরকে অসুস্থ দেখেছেন বলে দাবি করেন দিদারুল।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কিশোর ও একই মামলায় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় পরে মৃত্যুবরণকারী লেখক মুশতাক আহমেদকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সেখানে তাদের সঙ্গে দেখা হয় আহসান কবিরের।

আহসান কবির নিউজবাংলাকে জানান, আদালতে কিশোরকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখেছেন তিনি।

আহসান কবির বলেন, ‘আমাকে কিশোর বলেছে, গ্রেপ্তারের পর তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। যে কারণে তার পায়ে সংক্রমণ হয়েছে। ঘা সারছে না।’

এ ছাড়া নির্যাতনে কিশোরের কানের পর্দা ফেটে গেছে বলেও অভিযোগ করেন লেখক ও সাংবাদিক আহসান কবির। তিনি বলেন, ‘কিশোরের কান থেকে পুঁজ বের হচ্ছিল। সে বলছিল, তার ডায়াবেটিস অনেক বেড়ে গেছে। চোখেও কম দেখছে।’

এ সময় কিশোরের সঙ্গে থাকা মুশতাক আহমেদের সঙ্গেও আহসান কবিরের কথা হয়েছিল বলে জানান তিনি। বলেন, ‘দেখা হলে মুশতাক আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল। সে আমার কাছে মুরগির মাংস ও পরোটা খেতে চেয়েছিল।’

তবে মুশতাক তার ওপর নির্যাতনের কথা বলেননি বলে জানান আহসান কবির।

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দি অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মুশতাক আহমেদের মৃত্যু হয়।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, মুশতাক সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গত বছরের মে মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে এরাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। সেই মামলায় পরে মিনহাজ মান্নান ও দিদারুল জামিনে মুক্তি পান। তবে মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয় বার নাকচ হয়।

আহসান কবির বলেন, ‘এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারিতেও মুশতাক ও কিশোরকে একবার গাজীপুর থেকে ঢাকার আদালতে আনা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। খবর পেয়ে আমরা পৌঁছাতে পৌঁছাতে তাদের আবার আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।’

শুক্রবার সকালে মুশতাকের মরদেহ বুঝে নিতে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে যান মুশতাকের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা। সেখানে হাজির ছিলেন গত জানুয়ারিতে জামিন পাওয়া একই মামলার আসামি দিদারুল ইসলাম।

দিদারুল বেশ কিছুদিন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে মুশতাক ও কিশোরের সঙ্গে ছিলেন। পরে কাশিমপুরে তাদের আলাদা রাখা হয়।

দিদারুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে আমরা সাড়ে তিন মাস একসঙ্গে ছিলাম। কিশোর আমাদের বলেছিল যে, তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি তাকে অসুস্থ দেখেছি। এ ছাড়া কিশোরের ডায়াবেটিসসহ অন্য শারীরিক জটিলতাও আছে।’

মুশতাকের ওপর নির্যাতনের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান দিদারুল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসামিপক্ষের এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তারা আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য অমূলক অভিযোগ করছেন। কোনো আসামিকে আটক করার পর থানা পুলিশের মাধ্যমে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থাপন করতে হয়। আমরা যথাযথ নিয়ম মেনে কার্টুনিস্ট কিশোরকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে উপস্থাপন করেছি। সেই সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থা উল্লেখ করে মেডিক্যাল রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে কোনো ধরনের নির্যাতনের সুযোগ নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর