ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি অবস্থায় মৃত্যু হওয়া লেখক মুশতাক আহমেদের মরদেহে অস্বাভাবিক কিছু দেখেননি বলে জানিয়েছেন তার খালাতো ভাই চিকিৎসক নাফিস রহমান।
ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে কোনো সন্দেহ করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি একজন চিকিৎসক। আমি ওনার ভাই। আমি পোস্টমর্টেমের সময় ছিলাম। আমি তার মৃত্যু নিয়ে অস্বাভাবিক কোনো কিছু দেখিনি।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এক মামলায় গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাবন্দি ছিলেন লেখক মুশতাক। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, মুশতাক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে কোনো ধরনের সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে নাফিস বলেন, ‘আমি তো একজন চিকিৎসক। আমি তো একটি লাশ দেখলে বুঝি। আমি ওর পোস্টমর্টেমের সময় ভেতরেই ছিলাম। আমি কোনো সমস্যা দেখিনি। আমি তার লাশ দেখেছি, কোনো অস্বাভাবিক চিহ্ন দেখিনি।’
মুশতাকের মৃত্যু নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে নাফিস বলেন, ‘আমি পরিবারের পক্ষ থেকেই বলছি, আপনারা ওনার জন্য দোয়া করবেন। এ ছাড়া আর কোনো বিবৃতি নেই।’
মুশতাক ‘অসুস্থ ছিলেন না’
মুশতাককে গ্রেপ্তার করার দিন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়াকে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জামিন পাওয়ার আগে কেরানীগঞ্জে কিছু দিন মুশতাকের সঙ্গে ছিলেন তিনি।
কারাগারে মুশতাককে অসুস্থ দেখেছিলেন কি না নিউজবাংলার এমন প্রশ্নে দিদারুল বলেন, ‘না, তিনি অসুস্থ ছিলেন না। ওনার কোনো অসুখ ছিল না। তিনি সম্পূর্ণ ফিট ছিলেন। আমি ওনার সঙ্গে কেরানীগঞ্জের কারাগারে ছিলাম। তখন আমি দেখেছি, উনি কারাগারের মাঠে প্রতিদিন চার কিলোমিটার দৌড়াতে পারতেন।’
মুশতাক কোনো ওষুধ সেবন করতেন কি না, জবাবে দিদারুল বলেন, ‘না, ওনার কখনও কোনো মেডিসিনের প্রয়োজন পড়েনি।’
দিদারুল বলেন, ‘যখন একটি মানুষকে ১০ মাস কারাগারে রেখে মানসিক নির্যাতন করা হয়, তখন এ বিষয়ে তো যথেষ্ট সন্দেহ অবশ্যই তৈরি হয়। এ বিষয়ে আপনারই বুঝতে পারেন ওনার কী হয়েছিল। আর শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল কি না আমি জানি না। আমরা অবশ্যই সন্দেহ করতেছি ওনার মৃত্যু নিয়ে।’
আপনাদের কোনো দাবি আছে কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি তার (লেখক মুশতাক) পারিবারিক বন্ধু হিসেবে বলছি, এটার একটা নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। যেহেতু তিনি কারাগারে মারা গেছেন, আমরা সন্দেহ তো করছিই।
‘আমরা চাই যদি কোনো তদন্ত কমিটি হয়, সেখানে যেন তার পরিবারের কাউকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়।’