বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পায়রার আলোয় উজ্জ্বল দক্ষিণবঙ্গ

  •    
  • ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৫:০৪

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি যেসব পরিকল্পনা হাতে নেয়, তার একটি এই পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। এখন পর্যন্ত দেশে যত বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে তার মধ্যে এত বড় কেন্দ্র নেই একটিও।

পটুয়াখালীর পায়রায় চলমান কর্মযজ্ঞের একটির সুফল পাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হয়ে গেছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।

১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের বিশালাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে কলাপাড়ায় রাবনাবাদ চ্যানেলে আন্ধারমানিক নদীর তীরে।

এটি দেশের কয়লাভিত্তিক দ্বিতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনায় যে বড় কেন্দ্রগুলো নির্মিত হতে যাচ্ছে, তার মধ্যে প্রথম উৎপাদনে এল এটিই।

প্রকল্পের কর্মকর্তাদের আশা, মার্চের প্রথম সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রটি উদ্বোধন করবেন।

সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো উদ্বোধনের আগে পায়রা থেকেও বিদ্যুৎ যুক্ত হয়ে গেছে জাতীয় গ্রিডে। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে এক ইউনিটের ৬২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দক্ষিণবঙ্গের জাতীয় গ্রিডে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করা হচ্ছে।

গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মিত হলে সারা দেশেই সরবরাহ করা যাবে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি যেসব পরিকল্পনা হাতে নেয়, তার একটি এই পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এখন পর্যন্ত দেশে যত বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে, তার মধ্যে এত বড় কেন্দ্র নেই একটিও।

অবশ্য দেশে এর চেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রও আসবে। পাবনার রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে, সেটি উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে ২০২৪ সালে।

কয়লাভিত্তিক বিদুৎকেন্দ্র এর আগেও নির্মিত হয়েছে দেশে। ২০০৬ সালে উৎপাদনে আসে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র। সেখানে মোট তিনটি ইউনিটে উৎপাদনক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী (পূর্ত) রেজওয়ান ইকবাল খান নিউজবাংলাকে জানান, বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি)-এর যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা।

প্রকল্প ব্যয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। মূল কাজের পুরোটা তদারকি করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী সাইম রহমান নিউজবাংলাকে জানান, করোনা মহামারির মধ্যেও এই প্রকল্পের দেশি-বিদেশি কর্মকর্তা-শ্রমিকরা দিনরাত কাজ চালিয়ে গেছেন। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারায় সবাই উচ্ছ্বসিত।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল আলম জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে প্রতিদিন দরকার হচ্ছে ১৩ হাজার টন কয়লা যা ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে জাহাজে করে আসছে।

কয়লার কারণে পরিবেশের কতটা ক্ষতি হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে খোরশেদুল আলম বলেন, ‘বন্দরের নিজস্ব টার্মিনালে কয়লাবাহী জাহাজ ভেড়ার পর সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কনভেয়ারে করে এগুলো কোল্ডডোরে নেয়া হয়। সেখানেই মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদনের সব কার্যক্রম চলে। এখানে পরিবেশ বিপর্যয়ের কোনো সুযোগ নেই।’

প্রকল্প পরিচালক (প্রধান প্রকৌশলী) শাহ্ আব্দুল মওলা হেলাল জানান, উৎপাদন সক্ষমতা অর্জিত হলেও গ্রিডের অপ্রতুলতা ও সঞ্চালন লাইন নির্মাণ না হওয়ায় এখনই পুরোদমে উৎপাদনে যেতে পারছে না কেন্দ্রটি।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিন বাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন ও গ্রিডের কাজ শেষ হয়ে গেলে কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালানো হবে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে পুরোপুরি চালু হলে জাতীয় অর্থনীতির পাশাপাশি আঞ্চলিক অর্থনীতিতেও ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ।

এ বিভাগের আরো খবর