বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আইসিটি আইনে গ্রেপ্তারদের মুক্তি না দিলে মন্ত্রণালয় ঘেরাও

  •    
  • ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৩:৫৬

‘লেখক মুশতাকের হত্যাকারী রাষ্ট্র’ ব্যানারে আন্দোলনকারীরা তিনটি দাবি তুলে ধরেছেন। দাবিগুলো হলো- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, এই আইনে আটকদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং মুশতাকের মৃত্যুর তদন্ত ও বিচার করতে হবে।

কারাগারে বন্দি লেখক মুশতাকের মৃত্যুর পর রাজধানীর শাহবাগের বিক্ষোভ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবি এসেছে। দাবিগুলো না মানা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

আইসিটি আইনে এক মামলায় গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাবন্দি ছিলেন লেখক মুশতাক। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে তার মৃত্যু হয়।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, মুশতাক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে তাকে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

‘লেখক মুশতাকের হত্যাকারী রাষ্ট্র’ ব্যানারে কয়েক শতাধিক ছাত্র-জনতা শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ বিক্ষোভে নামে। সেখান থেকে সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় তিন দফা দাবি তুলে ধরেন আন্দোলকারীরা।

দাবি তিনটি হলো-

০১. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে

০২. এই আইনে আটকদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে

০৩. মুশতাকের মৃত্যুর তদন্ত ও বিচার করতে হবে।

আন্দোলনকারীরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলে জোরালো দাবি তুলেছেন। ছবি: নিউজবাংলা

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবিগুলোর বিষয়ে ১ মার্চের আগে সরকার থেকে কোনো বত্তব্য না আসলে ওই দিন সকাল ১১টায় টিএসসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ে যাবেন তারা।

বক্তারা ডিজিটাল নিরাপত্তার আইন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান৷ সেই সঙ্গে এই আইনে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবি জানান তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা রাগীব নাইম বলেন, ‘যে রাষ্ট্রকাঠামো আমাকে কথা বলতে দেয় না, নিরাপদে থাকতে দেয় না, সে রাষ্ট্র আমি চাই না। আমরা এই ডিজিটাল আইন বাতিল চাই, এই ডিজিটাল আইন মানুষ মারে।

‘মুশতাকের মৃত্যু রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত খুন। এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য স্বাধীন তদন্ত গঠন করতে হবে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ‘বলি’ মুশতাক

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী অবস্থায় মারা যাওয়া লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুকে ‘হত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে বামপন্থি ছাত্র সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা বলছেন, মুশতাক আহমেদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। সরকারের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণেই তিলে তিলে মারা গেছেন তিনি।

সংগঠনটির সভাপতি আল কাদেরী জয় বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে বাংলাদেশের মানুষের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। প্রতিবাদের ভাষাকে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে৷ এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বন্ধ করতে হবে। পুরো দেশটাকে আজ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। যার বলি হয়েছেন লেখক মুশতাক আহমেদ।’

লেখক মুশতাক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

‘লুটপাটকারীরা ঘুরে বেড়ায়, লেখকরা জেলে’

লেখক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক আরিফ রহমান বলেন, ‘আমরা এখান থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই লেখক মুশতাকের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আমরা মাফিয়া রাষ্ট্রে বাস করছি। এখানে লেখক কার্টুনিস্টদের ডিজিটাল আইনে জেলে পুরে রাখা হয় আর মাফিয়ারা ঘুরে বেড়ায়।

‘আমরা অবিলম্বে এই ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তার সবার মুক্তি চাই। এভাবে জেলে ভেতর তাদের মরতে দিতে পারিনা।’

ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, ‘১০ মাস আগে লেখক মুশতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে যাদেরকে সাক্ষী বানিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছিল তারা জানেই না কেন তাদের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে৷

‘আমাদের রাষ্ট্রে বড় বড় লুটপাটকারীরা ঘুরে বেড়ায় আর লেখকরা জেলের ভেতর মারা যান। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। সেই সঙ্গে আটককৃতদের মুক্তি চাই।’

বিক্ষোভে অংশ নেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিল্পবী ছাত্র মৈত্রী, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল ও উদীচীসহ বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা।

এ বিভাগের আরো খবর