মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া জাহাজের একজন নাবিকের ৯৯৯-এ ফোন কলে নদীতে ভাসমান অবস্থায় ১১ নাবিককে উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ।
৯৯৯-এর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার জানান, এমভি বোরহান সরদার-১ নামে একটি সিমেন্ট ক্লিংকারবাহী লাইটার জাহাজ ১১ জন নাবিকসহ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল বুধবার সকালে।
মেঘনা নদীর লক্ষ্মীপুরের রামগতি গজারিয়ার চর এলাকায় যখন তারা পৌঁছায়, তখন রাত নেমে আসে। নদীতে তখন কুয়াশার কারণে তাদের দৃষ্টিসীমা কমে গিয়েছিল। সেখানে নোঙর করে রাত কাটিয়ে সকালে রওনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
এদিকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুয়াশার কারণে দিগ্ভ্রান্ত হয়ে সেতু-৬ নামে একটি জাহাজ তাদের নোঙর করা জাহাজকে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। ধাক্কায় তাদের জাহাজের তলা ফেটে পানি উঠতে শুরু করে। কুয়াশার কারণে চারপাশে পরিষ্কার কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।
নাবিকরা বাঁচাও বাঁচাও বলে অনেক চিৎকার করলেও মাঝরাতে মাঝনদীতে কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। ইতিমধ্যে এক ঘণ্টা কেটে গেছে। রাত তখন সাড়ে ১২টা। জাহাজে পানি উঠে এক পাশ কাত হয়ে গেছে, যেকোনো সময় পুরো জাহাজ ডুবে যেতে পারে। হঠাৎ মো. সোহেল নামে এক নাবিকের মনে হলো শেষ চেষ্টা হিসেবে ৯৯৯-এ ফোন করে দেখা যাক।
আনোয়ার সাত্তার জানান, ৯৯৯ যখন মো. সোহেলের ফোন কলটি রিসিভ করে, রাত তখন ১টা বাজতে ১ মিনিট বাকি। ৯৯৯ তাৎক্ষণিকভাবে নৌপুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বিষয়টি জানায়। নৌপুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বিষয়টি লক্ষ্মীপুরের বড়খেরী নৌপুলিশ ফাঁড়িকে জানানো হয়। ঘটনাস্থল বড়খেরী নৌপুলিশ ফাঁড়ি থেকে নৌপথে ১২ থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।
খবর পেয়ে বড়খেরী নৌপুলিশ ফাঁড়ির একটি দল উদ্ধারকারী নৌযান নিয়ে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় রাত ২টার দিকে। কিন্তু কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কম থাকায় তাদের যথেষ্ট সাবধানে ও ধীরে নৌপথে অগ্রসর হতে হয়েছে। অবশেষে ভোর ৫টার একটু পরে মেঘনা নদী থেকে একটি মাছ ধরা ট্রলারের সহযোগিতায় নদীতে লাইফ জ্যাকেট পরা ভাসমান অবস্থায় ১১ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়।
এমভি বোরহান সর্দার-১ সম্পূর্ণরূপে ডুবে গেছে। উদ্ধার করা নাবিকদের নিরাপদে তীরে নিয়ে আসা হয়েছে এবং তারা সবাই সুস্থ আছেন।