ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি জব্দের আদেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর এক দশকে ধনকুবের বনে যাওয়া এই দুই ভাইয়ের ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমি ও ৫৫টি গাড়ি সরকারি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। ব্যাংকে থাকা ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকাও জব্দ করা হবে।
গাড়ির মধ্যে রয়েছে, বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার।
২৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে এই সম্পদ জব্দের আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
শুনানি শেষে বিচারক আবেদন গ্রহণ করেন। অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল নিউজবাংলাকে তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে গত বছরের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।
এই দুই ভাইয়ের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ছিলেন ফরিদপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি। গ্রেপ্তারের পর দুই ভাইকেই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে এ বছর পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল।
মাদক বিক্রি ও ভূমি দখলের অভিযোগও আছে তাদের বিরুদ্ধে। অবৈধ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করার অভিযোগও আছে তাদের বিরুদ্ধে।
গত ১৮ জুন সিআইডি কর্মকর্তা মিরাজ আল মাহমুদকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
এই দুই ভাই আগে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের হাত ধরে তারা আওয়ামী লীগে আসেন।
রাজবাড়ীতে ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর এক আইনজীবী খুন হন। সে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন এই দুই ভাই।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই দুই ভাই অন্তত দুই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
গত বছরের ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হন ফরিদপুরে ত্রাস হয়ে উঠা দুই ভাই।
হামলার দুই দিন পর ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।
এরপর ৭ জুন রুবেল-বরকতসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।