একটি মামলায় ভুয়া আগাম জামিননামা তৈরির ঘটনায় বগুড়া সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুর ইসলামসহ ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
সাত দিনের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করতে বগুড়ার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
ভুয়া জামিননামার বিষয়টি বুধবার ধরা পড়ার পরপরই বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম নিউজবাংলাকে জানান, সকালে একজন আইনজীবী হাইকোর্টের ওই বেঞ্চে এসে একটি মামলায় ওই ৩০ আসামির জামিন হয়েছে কিনা জানতে চান। আদালতের বেঞ্চ অফিসার এ সময় তাকে জানান, সেখান থেকে এ ধরনের কোনো আগাম জামিন দেয়া হয়নি।
বেঞ্চ অফিসার জামিন আদেশের কোনো কপি আছে কি না জানতে চাইলে ওই আইনজীবী মোবাইলে কপির একটি ছবি দেখান। এরপর বেঞ্চ অফিসার বিষয়টি আদালতকে জানালে ভুয়া জামিননামার বিষয়টি ধরা পড়ে। আদালত এরপর ৩০ আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।
এ মামলার বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের বেঞ্চের উল্লেখ করে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জামিন পাওয়ার দাবি করেন বগুড়ার যুবলীগ নেতা আমিনুর ইসলামসহ ৩০ আসামি। তবে ওই দিন এই আদালত থেকে এমন কোনো আদেশ হয়নি। এমনকি সেখানে যেসব আইনজীবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাও ভিত্তিহীন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটিতে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোট ভাই মশিউল আলম দীপন বাদী হয়ে উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুর ইসলামকে প্রধান করে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। ওই মামলাতেই ৩৩ আসামির মধ্যে ৩০ জনের জামিননামার ভুয়া নথি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে আমিনুর ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে ১৮ নম্বর কোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছি।’
তবে নিজের পক্ষের আইনজীবীর নাম জানাতে রাজি হননি আমিনুর। পরে তার মোবাইল ফোনে আবারও যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা এভাবে ভুয়া জামিননামা তৈরি করেছেন, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলে এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’