এপ্রিলে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত রুটে নতুন ব্যবস্থায় শুরু হচ্ছে বাস চলাচল, যাকে বলা হচ্ছে ‘বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি’। তবে নগরবাসীকে এ সেবা নিতে কিলোমিটারপ্রতি গুনতে হবে অতিরিক্ত ৫০ পয়সা।
ঢাকা মহানগরীতে রুটগুলোতে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া বর্তমানে ১ টাকা ৭০ পয়সা। ১ এপ্রিল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হতে যাওয়া নতুন ব্যবস্থায় এই রুটে অতিরিক্ত ৫০ পয়সা ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। ফলে কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া হবে ২ টাকা ২০ পয়সা।
রাজধানীতে এখন কাগজে-কলমে ২৯১টি রুটে প্রায় ৩০ হাজার বাস চলে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী রুট ৪২টিতে নামিয়ে আনা হবে। ৯টি ক্লাস্টারে ২২টি কোম্পানি চালাবে এসব বাস। বাসের সংখ্যা কমিয়ে করা হবে ৯ হাজার ২৭টি।
মঙ্গলবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বুড়িগঙ্গা হলে রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং যানজট নিরসনে গঠিত বাস রুট র্যাশনালাইজেশন বিষয়ক কমিটির ১৬তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান এ কমিটির সভাপতি ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
তাপস বলেন, ‘প্রতি কিলোমিটার ২ টাকা ২০ পয়সা হারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন এতে মন্ত্রণালয়ের সম্মতি লাগবে, অনুমোদন লাগবে। আশা করছি, যেহেতু বিআরটিএ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে, মন্ত্রণালয়ও এটা নির্ধারণ করে দেবে।’
মেয়র বলেন, ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত পাইলট রুটের বাসভাড়া নির্ধারণের বিষয়টি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) ওপর অর্পিত ছিল এবং তারা সেটা সম্পন্ন করেছে। বিআরটিএ এরই মাঝে প্রস্তাবিত রুটের ভাড়া নির্ধারণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
গত ডিসেম্বরে ঘোষণা দেয়া হয় ১ এপ্রিল থেকে রুটভিত্তিক কোম্পানির অধীনে বাস চলাচল শুরু হবে। এদিন কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত রুট দিয়ে শুরু হচ্ছে পাইলট উদ্যোগ। এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হচ্ছে ‘বাস রুট ফ্রাঞ্চাইজি পাইলটিং’।
এপ্রিল থেকে এই প্রকল্প চালুর ব্যাপারে আশাবাদী মেয়র বলেন, ‘বাসগুলো মেরামত করতে হবে। আমরা প্রক্রিয়াগত কাজগুলো আশা করছি সম্পন্ন করতে পারব। এরই মাঝে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সহজ শর্তে এবং সুদে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছি।’
মেয়র বলেন, ‘বর্তমানে এই রুটে দুটি প্রতিষ্ঠানের ১৫৫টি বাস চলাচল করছে। আমরা যে যৌথ মূলধনী চুক্তি করব, তাতে এই দুটি প্রতিষ্ঠানকে একটি প্রতিষ্ঠানের আওতায় এনে এই কার্যক্রম নেব।’
২০১৬ সালের শুরুতে ছয়টি কোম্পানির অধীনে ছয় রঙের বাস নামানোর উদ্যোগ নেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। দেড় বছরের মধ্যে নতুন ৩ হাজার বাস নামানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
তবে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আনিসুল হকের মৃত্যুর পর থেমে যায় উদ্যোগ।
সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।