দেশে থাকা ও বাড়িতে থেকে চিকিৎসার শর্তে সাময়িক মুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে চাইছে বিএনপি। এ জন্য মুক্তির শর্তে পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়েছে দলটি।
জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ এক মাসেরও কম বাকি থাকাকালে এই দাবি এসেছে।
সোমবার দুপুরে বিএনপির পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানি তিনি (বেগম খালেদা জিয়া) দারুণভাবে অসুস্থ। তার যে চিকিৎসা প্রয়োজন, সেটি এখানে সম্ভব নয়। এমনকি যে হাসপাতালে তিনি ছিলেন সেখানেও সম্ভব হয় নাই।
‘আমরা দাবি জানাব, এই ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা সেটা প্রত্যাহার করা হোক এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হোক, যেন তিনি তার চিকিৎসার প্রয়োজনে যখন যেখানে যেতে চান তিনি যেতে পারেন।'
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার দুই বছর পর গত বছরের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর আরও ছয় মাস বাড়ানো হয় মুক্তির মেয়াদ, যেটি শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ মার্চ।
মুক্তির শর্ত মেনে খালেদা জিয়া তার গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ আছেন। এই ১১ মাসে তিনি একবারও হাসপাতালে যাননি।
যে শর্তে বিএনপি নেত্রীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে, সেটিকে ‘অমানবিক ও অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে নজরুল বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে রাজনৈতিক নেতাদের বাইরে যাওয়ার বহু দৃষ্টান্ত আছে। এমনকি জেলে থাকা অবস্থাও বাইরে যাওয়ার দৃষ্টান্ত আছে। কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা মনে করি, এই অযৌক্তিক ও অমানবিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা দরকার।’
খালেদা জিয়া বর্তমানে কেমন আছেন জানতে চাইলে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা তো তার সঙ্গে দেখাই করতে পারি না। আমরা আপনাদের মতো যতটুকু জানি, তিনি দারুণভাবে অসুস্থ।'
গত ২০ ফেব্রুয়ারি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
ওই বৈঠকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা কমিটির সদস্য করায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। দাবি করা হয়, রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তার দলীয় পদ লাভ অবৈধ।
মুক্তিযুদ্ধে শহিদের সংখ্যা নিয়ে কটূক্তির মামলায় নড়াইলে খালেদা জিয়া ও স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার নিন্দা জানিয়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয় ওই বৈঠকে।