বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তারিখ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, মার্চে মাস্টার্সের যে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল হবে না তা। এই পরীক্ষা নেয়ার যে কারণ ছিল ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষা, পিছিয়ে দেয়া হয়েছে সেটিও।
করোনা মহামারির কারণে ৪৩তম বিসিএস আবেদনের সময়সীমা দুই মাস বাড়িয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত করেছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হওয়া কথা ছিল তাও পেছানো হবে বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে সোমবার দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ৪৩তম বিসিএস নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী।
‘করোনার মধ্যে যাদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে, তাদের জন্য বিশেষ বিবেচনায় বিসিএস পরীক্ষার আবেদন ও পরীক্ষার তারিখ পেছানো হবে। করোনার কারণে বয়স অতিক্রম হয়ে যাওয়া কোনো পরীক্ষার্থী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
৪৩তম সাধারণ বিসিএসের জন্য গত ৩০ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ৩০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় আবেদন প্রক্রিয়া। শুরুতে আবেদনের শেষ সময় ৩১ জানুয়ারি ঠিক করা হলেও পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশে সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয় ৩১ মার্চ পর্যন্ত। পরীক্ষার তারিখ ঠিক করা হয় ৬ আগস্ট।
৪৩তম বিসিএসের মাধ্যমে সরকার বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ জনকে নিয়োগ দেবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে নিয়োগ দেয়া হবে ৩০০ জনকে।
পুলিশের এএসপি পদে নিয়োগ দেয়া হবে ১০০ জনকে। এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেয়া হবে ২৫ জনকে। শিক্ষায় থাকছে সবচেয়ে বেশি ক্যাডার, ৮৪৩ জন।
এ ছাড়া অডিটে ৩৫ জন, ট্যাক্সে ১৯ জন, কাস্টমসে ১৪ জন, সমবায়ে ২০ জন, ডেন্টাল সার্জন পদে ৭৫ জন ও অন্যান্য ক্যাডারে নিয়োগ দেয়া হবে ৩৮৩ জনকে।
প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ করে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল আগামী ১৭ মে থেকে খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ২৪ মে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রায় দেড় লাখ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষা নেয়া হবে না। অনলাইনে চলবে শিক্ষা কার্যক্রম।
হল খোলার আগে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজনে ভর্তি পরীক্ষার তারিখও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তারিখের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা হবে।
‘তড়িঘড়ি করে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের করোনা নিয়ন্ত্রণের যে সাফল্য, তা নষ্ট করে দেয়া যেতে পারে না। সরকারি ও বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এসব সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে।’
আগামী ১৩ মার্চ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো সীমিত পরিসরে কেবল মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়ার যে সিদ্ধান্ত আগে জানানো হয়েছিল, সেটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ধাপে ধাপে সাত দফা ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সব শেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়।