করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসতেই বাংলাদেশের শ্রমবাজারের জন্য সুসংবাদ এলো সিঙ্গাপুর ও রোমানিয়া থেকে। ১২ হাজারের বেশি শ্রমিক নিতে ঢাকাকে প্রস্তাব পাঠিয়েছে দেশ দুটি।
এর মধ্যে সিঙ্গাপুর নেবে ১০ হাজার শ্রমিক। আর ঢাকায় মিশন খোলার পর ইউরোপের দেশ রোমানিয়া নেবে দুই থেকে চার হাজার শ্রমিক।
সোমবার বেলা আড়াইটায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বলেন, ‘কোভিড-পরবর্তী সময়ে সুখবর হলো, সিঙ্গাপুর আরও ১০ হাজার শ্রমিক নেবে। সিঙ্গাপুর মিশন দিনে ৫০০-এর অধিক ভিসা ইস্যু করছে।’
মন্ত্রী জানান, শিগগিরই ঢাকায় মিশন খুলবে রোমানিয়া। মাংস উৎপাদন খাতে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেবে দেশটি।
মোমেন বলেন, ‘ইউরোপিয়ান দেশ রোমানিয়া ঢাকায় নতুন মিশন খোলার পর সেখানেও দুই থেকে চার হাজার মানুষ নেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। রোমানিয়া মাংস উৎপাদন বিশেষ করে হালাল মুরগি উৎপাদন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক নেবে।
মন্ত্রী জানান, বিদেশে নারী শ্রমিকদের নির্যাতন যাতে বন্ধ করা যায় এবং নিরাপত্তা দেয়া যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
বিদেশে ছয় লাখ নারী শ্রমিক আছে। নারীরা সাধারণত গৃহস্থালিতে কাজ করে। বিশেষ করে সৌদি আরবে। সম্প্রতি সেখানে এক বাংলাদেশি শ্রমিক হত্যার দায়ে সে দেশের আদালতের রায় নারী শ্রমিকদের সুরক্ষা দেবে বলে মত মন্ত্রীর।
যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই সফরে জো বাইডেনের প্রশাসনের সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করার কথা রয়েছে মোমেনের। বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা বিষয়ে দুটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেবেন; জবাব দেবেন নানা নেতিবাচক প্রচারণারও।
মন্ত্রী জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেটের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তার। ভূরাজনৈতিক ইস্যুতে তুলে ধরবেন বাংলাদেশের অবস্থান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি রাশেদ কে চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার বিষয়েও এই সফরে আলোচনা হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৬ মার্চ ঢাকা সফরে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর আগে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সফর রয়েছে বাংলাদেশে। এই সফরে দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয় আলোচনা হবে বলে জানান মোমেন।
আর রোহিঙ্গা নেয়া সম্ভব না
মিয়ানমারের সেনাদের নিপীড়নের মুখে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে এমনিতেই বেকায়দায় আছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে খবর এসেছে আন্দামান সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই আরও নৌকা ভাসছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কুতুপালংয়ে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮৪ হাজার লোক বাস করে, যা বিশ্বে বিরল। আমাদের পক্ষে আর একজনকেও নেয়া সম্ভব না। অন্যরা নিয়ে নিক।’