একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শনিবার এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একুশের চেতনার উত্তরাধিকারী হয়ে এদেশের সংগ্রামী মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ও মৃতপ্রায় গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত করতে দ্রুত খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।’
ফখরুল বলেন, ‘স্বাজাত্যবোধ ও অধিকারবোধের চেতনাকে শাণিত করেছিল মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি। সেই চেতনা নস্যাৎ করে একদলীয় শাসনের জগদ্দল পাথর আজ জনগণের কাঁধে চাপানো হয়েছে।’
তিন বছর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাগারে যান বিএনপি নেত্রী। পরে হাইকোর্ট সাজা পাল্টে ১০ বছর করে। চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাতে তার দণ্ড হয় সাত বছরের।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে গত বছরের ২৫ মার্চ বিশেষ বিবেচনায় খালেদার দুই দণ্ড স্থগিত করা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে।
উচ্চ আদালতে বিএনপির সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তার স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন নিয়ে যান। শেখ হাসিনা তাতে সাড়া দিলে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান বিএনপি নেত্রী। পরে আরও বাড়ানো হয় মুক্তির মেয়াদ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ রেখেছে আদালত। এদিন খালেদাকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
এসব ‘মিথ্যা’ মামলার মাধ্যমে বিএনপির চেয়ারপারসনে হয়রানি করার পাশাপাশি তার মৌলিক অধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে বলে মনে করেন ফখরুল।
‘২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতের নির্বাচনে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে প্রতারিত করা হয়েছে, যা খোলাখুলি কারচুপির এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। গণতন্ত্রকে সমাহিত করে এ দুঃশাসন দীর্ঘায়িত করতে অবৈধ শক্তির জোরে সাজানো মিথ্যা মামলায় জনগণের নেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছিল প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য।
‘এখন তাকে কারাগার থেকে নিজ গৃহে রাখা হলেও কার্যতঃ তিনি গৃহবন্দী। তার সব মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।’
অধিকার আদায় এবং অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে ভাষা শহিদেরা আমাদের প্রেরণার উৎস উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে তারা আত্মত্যাগের যে গৌরবদীপ্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তার ফলাফল হয়েছে সুদূরপ্রসারী। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।’