বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বানান নিয়ে বিশৃঙ্খলা যাবে না?

  •    
  • ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০৯:২৫

সাইনবোর্ডে বাংলা বানানের করুণ দশা। বানান রীতির ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমিও একক নিয়ম অনুসরণ করে না।   

অফিসের কাজ গুছিয়ে বাস ধরলাম উত্তরা যেতে। বিকেল হয়ে এসেছে। ঘরমুখো মানুষের ভিড়। ঢাকার সড়কে বাস মানেই থেমে থেমে চলা। বাস যানজট ঠেলে এগিয়ে যাচ্ছে প্রগতি সরণি ধরে।

জানালায় চোখ রাখতেই বাহারি সব দোকানের সাইনবোর্ড চোখে পড়ে। সাইনবোর্ডে ঠিকানার জায়গায় ‘সরণি’ বানানের বাহার দেখে চক্ষু চরকগাছ।

কোথাও লেখা ‘স্বরণি’, কেউ লিখেছেন ‘সরনী’। আবার দেখা গেল লেখা হয়েছে ‘স্মরনী’, কোথাও ‘স্মরণী’ বা ‘স্মরণি’। যে যেভাবে ইচ্ছে, লিখেছে। প্রকৃত বানান ‘সরণি’ চোখে পড়ল খুবই কম।

বিশেষ করে সাইনবোর্ডে বাংলা বানানের করুণ দশা চোখে লাগে। বানানের সাধারণ নিয়মে বিদেশি শব্দের প্রতিবর্ণিকরণে দীর্ঘ-স্বর পরিহার করা হয়। কিন্তু অহরহ চোখে পড়ে ‘জানুয়ারী’ বা ‘ফেব্রুয়ারী’ বানান। এমনকি বাংলা একাডেমি প্রণীত অভিধানেও বেশ কিছু ইংরেজি শব্দকে দীর্ঘ-ঈকার দিয়ে লেখা হয়েছে।

বাংলা একাডেমি প্রণীত আধুনিক বাংলা অভিধান-এর সবশেষ সংস্করণের ৩০৮ নম্বর পৃষ্ঠায় দেখা যায়, Keyboard কে বাংলায় লেখা হয়েছে: কী-বোর্ড।

এই বিশৃঙ্খল দশা নিয়ে কথা হয় ভাষাবিদ ড. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কী-বোর্ড বানানে ঈ-কার দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এই সব তো সমস্যা।’

সরকারি বিদ্যালয়গুলোর সাইনবোর্ডে নিয়মিতই দেখা যায় ‘সরকারি’ শব্দটি ‘সরকারী’ লেখা।

বানানের এই বিশৃঙ্খলা এড়াতে ভাষাবিদ ড. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ বলেন, ‘দু-এক ক্ষেত্রে হয়তো বাংলা একাডেমি বলতে পারে, দুটোই প্রচলিত, যেকোনো একটা ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেন এটা করতে হবে? যেহেতু বানান সংস্কার করা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে দুটো বানান অনুসরণ করার যুক্তি নাই।’

তিনি বলেন, ‘যেমন ধরা যাক প্রতিবেশী দেশ ‘চিন’। এখন তো ‘চিন’ হ্রস্ব-ইকার। আমার কাছে এতো খারাপ লাগে এটা দেখতে। চ দীর্ঘ-ঈকার ছিল, ক্ষতিটা কী ছিল?’

ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে ‘ঈদ’ থেকে পরিমার্জিত ‘ইদ’ বানানটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনার সূত্রপাত নিয়েও কথা বলেন এই ভাষাবিদ।

তিনি বলেন, ‘এই “ইদ” নিয়ে অনেকদিন নিজেদের মধ্যে ঝগড়া হলো। এখন প্রশ্ন হলো এতদিন ‘দীর্ঘ-ঈ’ ছিল, এখন তারা ‘হ্রস্ব-ই’ দিচ্ছে। এইটা তো আরবি শব্দের উচ্চারণ অনুযায়ী হয়। তাদের বলতে হবে ‘দীর্ঘ-ঈ কার’ আর ‘হ্রস্ব-ই’ কারের মধ্যে পার্থক্য কী। এটা তো বলছে না।’

বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধান-এর প্রকাশক ড. জালাল আহমেদ বলেন, ‘এটা তো খুবই দুঃখজনক বিষয়। এখনও বাংলা বানানে পরিপূর্ণ শৃঙ্খলা, যেটা প্রত্যাশিত ছিল, সেটা আমরা স্থাপন করতে পারি নি।’

তিনি বলেন, ‘একই শব্দ যদি দুই বানানে লেখা হয়ে থাকে, আমরা যারা শিক্ষিত সংবেদনশীল লোক, তাদের বিভ্রান্ত হয়ে যাওয়ার কিছু নেই। তাদের জানা দরকার, কেন এটা হচ্ছে? অনেক সময় অভিধানে থাকে, যেমন ইতিপূর্বে শব্দটা আছে, কিন্তু এটার প্রকৃত বা শুদ্ধ হচ্ছে ইতোমধ্যে। এরকম বিভিন্ন ধরনের শব্দ অভিধানে আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর