রাজধানীর চকবাজার থানায় করা অস্ত্র মামলায় সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বরখাস্ত কাউন্সিলর ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ বৃহস্পতিবার পুলিশের দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ইরফানকে অব্যাহতির নির্দেশ দেন।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ইরফানের আইনজীবী প্রাণ নাথ সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাননি, তাই তাকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছেন। আদালত সার্বিক বিবেচনায় তা গ্রহণ করেছে।
গত ৫ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার পরিদর্শক (অপারেশন) দেলোয়ার হোসেন অস্ত্র মামলায় ইরফান সেলিমকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।
একই থানায় করা মাদক মামলায়ও ইরফানের অব্যাহতির সুপারিশ করেন দেলোয়ার।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান মোটরসাইকেলে করে রাজধানীর নিউমার্কেট থেকে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় ইরফান সেলিমের গাড়ি তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়।
পরে মোটরসাইকেল নিয়ে ওই গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে নিজের পরিচয় দেন ওয়াসিফ। তখন ইরফানের সঙ্গে থাকা অন্যরা গাড়ি থেকে বের হয়ে তাকে কিল-ঘুষি মারে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ওই সময় ওয়াসিফের স্ত্রীকেও গালাগাল করা হয়।
এ ঘটনায় পরের দিন সকালে ইরফান, তার দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লা, এবি সিদ্দিক দিপু, গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিন জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ।
ওই দিনই পুরান ঢাকার বড় কাটরায় হাজি সেলিমের বাড়িতে দিনভর অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ইরফানের কক্ষে অবৈধ ৩৮ থেকে ৪০টি ওয়াকিটকি ও বিদেশি মদ পাওয়া যায়। এ ছাড়া একটি অবৈধ পিস্তল ও এয়ারগান উদ্ধার করা হয় ওই বাড়ি থেকে। পরে গ্রেপ্তার করা হয় ইরফান ও জাহিদুলকে।
এ ছাড়া মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে এক বছর কারাদণ্ড দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। জাহিদুলকে ওয়াকিটকি বহনের দায়ে ছয় মাসের সাজা দেয়া হয়।
পরে ২৮ অক্টোবর র্যাব-৩-এর ডিএডি কাইয়ুম ইসলাম চকবাজার থানায় ইরফান ও জাহিদুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের আলাদা চারটি মামলা করেন।
কলাবাগানে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে করা মামলায় সম্প্রতি ইরফানসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে ডিবি পুলিশ ।