চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত প্রায় ১৮৮ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে করোনা মহামারির কারণে সাময়িক ধীরগতি দেখা দিলেও এখন আবার গতি ফিরে এসেছে কাজে।
এরই মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ প্রায় ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
এই প্রকল্পে যাত্রী ওঠানামার জন্য নির্মাণ করা হবে ৯টি স্টেশন। এসব স্টেশন নির্মাণও চলছে দ্রুতগতিতে।
আগামী বছরের মধ্যেই কক্সবাজারের সঙ্গে দেশের সব অঞ্চলের সরাসরি রেল যোগাযোগ শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সম্পতি রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন কক্সবাজার সফরকালে বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেলপথ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ শুরু হয় ২০১৮ সালে, যা শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের মধ্যে।
প্রথমে এই প্রকল্পের ব্যয় ১৮ হাজার কোটি টাকা থাকলেও তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের সময়সীমা ধরা হয়েছে ৪ বছর।
প্রথম পর্যায়ে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১০১ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য আরও ৩৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
এই রেললাইন চালু হলে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, জেলায় ১৫টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এর মধ্যে অন্যতম এই রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প।
এটি বাস্তবায়ন হলে ৬ লাখ মানুষ স্বল্পসময়ে কক্সবাজারে যাওয়া-আসা করতে পারবে। আর পর্যটন নগরীর পণ্য যাবে সারা দেশে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে করিডরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন ও পর্যটন শহর কক্সবাজারকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রকল্পের কাজ দ্রুত চলছে। পূর্বনির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই এই রেলপথ মানুষ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রাস্তা চার লেনে উন্নীত করা, কর্ণফুলী টানেলের পাশাপাশি রেললাইনের কাজ শেষ হলে কক্সবাজারে পর্যটক কয়েক গুণ বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগব্যবস্থা তৈরি হলে পর্যটন নগরীতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় আরও বাড়বে।
রেলওয়ে প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ম্যানেজার ইকবাল হোসেন বলেন, করোনার মহামারিতে এই প্রকল্পের কাজ কিছুটা ধীরগতিতে হলেও এখন গতি ফিরেছে। দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পে ব্রিজ, স্টেশন, মাটি ভরাট করে রেললাইন বসানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। মাটি ভরাটের কাজ শেষ হলে ট্র্যাকে বসবে মূল রেললাইন।
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত প্রায় ১৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে, তা শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে।