বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মৃত্যুদণ্ড গুলি নাকি ফাঁসির দড়িতে?

  •    
  • ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২২:১২

১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খুনিদের ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে দণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছিল। হাইকোর্ট দণ্ড বহাল রাখলেও কীভাবে তা কার্যকর হবে তা বলেনি। তবে বাংলাদেশে কখনও গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি।

২০ বছর আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি এবং ৪০ কেজি ওজনের দুটি বোমা পুঁতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় বিচারিক আদালতে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।

এই মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১০ জনকে ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেয়া হয়।

ডেথ রেফারেন্স শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ যে রায় দেয়, তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

ফলে দণ্ড ফায়ারিং স্কোয়াডে নাকি ফাঁসির দড়িতে কার্যকর হবে, সেই বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট করে এখনও বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশে আদালতের রায়ে এখন পর্যন্ত কারও মৃত্যুদণ্ড গুলি করে কার্যকর করা হয়নি।

১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খুনিদের ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে দণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছিল। তবে হাইকোর্ট আপিল শুনানি শেষে দণ্ড কার্যকর যে ফাঁসির দড়িতে হবে, সেটিও জানিয়ে দেন বিচারপতি।

জাতির পিতার ছয় খুনির দণ্ড কার্যকর হয়েছে ফাঁসির দড়িতেই।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রায় কার্যকর গুলিতে না ফাঁসি দিয়ে হবে সেটি হাইকোর্ট রায়ে বলে দেয়নি। রায়ে মৃত্যুদণ্ডসংক্রান্ত ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ করেছে। তবে পূর্ণাঙ্গ রায়ে হয়ত আদালত বলে দেবে। এ ছাড়া এখনও আপিল বিভাগ আছে, সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম শাজাহান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রচলিত আইনে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিধান নাই। তবে বিশেষ আইনে হ্যাংগিং (ফাঁসিতে ঝুলিয়ে) অথবা শুট (গুলি) করে দণ্ড কার্যকরের সুযোগ আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গুলি করে কোনো রায় কার্যকর হয়নি।’

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের যে ধাপগুলো বাকি

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আপিল বিভাগে আবেদন না করলে আইন অনুযায়ী রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

তবে আইন অনুযায়ী সংক্ষুব্ধ পক্ষ আপিল বিভাগে আবেদনের জন্য ৩০ দিন সময় পাবেন। এ সময়ের মধ্যে যদি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো পক্ষই আপিল না করে তাহলে দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

কোনো পক্ষ আপিল করলে সেটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিচারাধীন হিসেবে বিবেচিত হবে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ বলেন, ‘আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলেও রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার একটি সুযোগ থাকবে আসামিদের। সেটি নিষ্পত্তি হলেই সাজা কার্যকর হবে।’

২০০০ সালের ২১ জুলাই কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশ ছিল আগের দিন সমাবেশস্থলের পাশে প্রথমে ৭৬ কেজি ও পরে ৪০ কেজি ওজনের দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয়।

এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা করেন।

২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও নয়জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়। আদালত গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেয়। এ ছাড়াও চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়।

রায়সহ সব নথি ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে আসে। এরপর প্রধান বিচারপতির নির্দেশে পেপারবুক তৈরি হলে হাইকোর্টে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।

কিন্তু হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ কয়েকবার পুনর্গঠন হওয়ায় মামলাটির শুনানি বেশ কয়েকবার পিছিয়ে যায়।

মৃত্যুদণ্ড যাদের

বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট যাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, তারা হলেন ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।

এই মামলার প্রধান আসামি ছিলেন মুফতি আবদুল হান্নান। তবে সিলেটে বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার হোসেনের ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় আগেই।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলারও আসামি ছিলেন মুফতি হান্নান।

এ বিভাগের আরো খবর