বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন থাকবে না ফেসবুক-ইউটিউবে

  •    
  • ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৫:৪৪

১ ফেব্রুয়ারি কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরা অল দ্য প্রাইমিনিস্টার’র মেন নামের ওই তথ্যচিত্র প্রকাশ করে। শুরুতেই প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরায় বাংলাদেশকে নিয়ে করা প্রতিবেদন ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ ফেসবুক-ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার বেঞ্চ বুধবার এই আদেশ দিয়েছে।

দেশকে নিয়ে এভাবে প্রোপাগান্ডামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরও এতদিন কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় আদালত উষ্মা প্রকাশ করেছে।

আদালতে রিটকারি আইনজীবী এনামুল কবির ইমন, বিটিআরসির পক্ষে আইনজীবী রেজা ই রাকিব, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

এ ছাড়া আদালতে এ বিষয়ে ছয় জন সিনিয়র আইনজীবী তাদের অভিমত ব্যক্ত করেন।

আদালতের আদেশের পর বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা ই রাকিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত অ্যাটর্নি জেনারেল ও আমাদেরকে শুনে যে অর্ডারটা দিল সেটা হচ্ছে বিটিআরসিকে উনি আদেশ দিয়েছেন ইমিডিয়েটলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অল দ্য প্রাইমিনিস্টার’স মেন’ নামে যে প্রোপাগান্ডা চালিয়েছিল আলজাজিরা তা ইমিডিয়েটলি রিমুভ করতে। রিমুভ করার জন্য যা যা করণীয় তা তা করতে বলেছে। ইফ নেসেসারি ফরেন কাউন্টারপার্ট যারা আছে যেমন ফেসবুক, ইউটিউব তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যা যা করার তাই করতে বলেছে।

তিনি বলেন, ‘কোর্ট আরও উষ্মা প্রকাশ করেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় রাষ্ট্রপতি, সেনাবাহিনীর প্রধান এবং সেনাবাহিনীর ইনস্টিটিউশন নিয়ে যে ধরনের প্রোপাগান্ডা চালাল আল-জাজিরা, রাষ্ট্রের বিভিন্ন অরগান যেভাবে চুপ করে বসেছিল সে কারণে উনি উষ্মা প্রকাশ করেছেন।’

১ ফেব্রুয়ারি কাতারভিত্তিক চ্যানেল আল জাজিরা অল দ্য প্রাইমিনিস্টার’র মেন নামের ওই তথ্যচিত্র প্রকাশ করে। শুরুতেই প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সর্বশেষ সোমবার রাতে আইএসপিআর ফের প্রতিবাদ জানায়।

এ ধরনের প্রতিবেদনে পুরো জাতির মধ্যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলেও বুধবার আদালত মন্তব্য করেছে।

আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেল আল জাজিরায় সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধ এবং এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ছয় জন অ্যামিকাস কিউরি তাদের অভিমত দিয়েছেন।

ছয় অ্যামিকাস কিউরি হলেন- আব্দুল মতিন খসরু, প্রবীর নিয়োগী, আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, কামাল উল আলম, ফিদা এম কামাল ও শাহদীন মালিক।

সবার বক্তব্য শুনে আদালত আদেশের জন্য বুধবার রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শুনে আদেশের জন্য রেখেছে আদালত।

আল জাজিরা বাংলাদেশে সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রিট দায়ের করেন আইনজীবী এনামুল কবির ইমন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত মতামত গ্রহনের জন্য ৬ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেয়।

তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার ছয় অ্যামিকাস কিউরি তাদের মতামত তুলে ধরেন।

১ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরা বাংলাদেশ নিয়ে একটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করে। তারপর বিষয়টি নিয়ে দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে আইনজীবী সংক্ষুব্ধ হয়ে রিট দায়ের করেন।

রিটে চ্যানেলটিতে প্রচারিত অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন প্রতিবেদনটি ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অপসারণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশ প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

বুধবার অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন প্রচারের ঘটনায় চার জনের নামে মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

মামলার চার আসামি হলেন আল জাজিরার অনুসন্ধানী দলের সদস্য ও হুইসেল ব্লোয়ার হিসেবে পরিচিত সায়ের জুলকারনাইন সামি, নেত্র নিউজের এডিটর-ইন-চিফ তাসনিম খলিল, সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান ও আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোস্তফা সওয়াগ।

বুধবার সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক আবেদনটি জমা দেন।

মামলার আবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিকেলে মামলাটির আদেশ দেয়ার কথা রয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে সেনাপ্রধানকে নিয়ে যেসব বিষয় উঠে এসেছে তা নিয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘সেনাপ্রধানকে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। সেনাপ্রধানকে হেয়প্রতিপন্ন করা মানে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হেয়প্রতিপন্ন করা। আপনাদেরকে এই জিনিসটা বুঝতে হবে।

'আমার কারণে আমার ইনস্টিটিউশন, অর্গানাইজেশন, যেটা সেনাবাহিনী এবং আমাদের সরকার যাতে কোনোভাবে বিব্রত না হয়, বিতর্কিত না হয়, আমি সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ সচেতন।’

আল জাজিরার তথ্যচিত্র অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন নিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘যা কিছু আপনারা শুনছেন, এগুলোর কোনো প্রমাণ...এগুলো হয় বিভিন্ন জায়গা থেকে কাটপিস, অন্যান্য জিনিস সন্নিবেশিত করে তারা এগুলো করতেই পারে। তাদের এই উদ্দেশ্য হাসিল হবে না।’

আল জাজিরার প্রতিবেদনের সঙ্গে বাংলাদেশের যারা যুক্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না, জানতে চাইলে জেনারেল আজিজ বলেন, ‘সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তেমন কিছু করার হয়তো থাকবে না। আমি নিশ্চিত সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, সংস্থা হয়তো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’

তথ্যচিত্রে ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘একটা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ছিল, যেটা থেকে ইতিমধ্যে অব্যাহতিপ্রাপ্ত ছিল। সে অব্যাহতি মার্চ মাসে হয়েছিল। আমি এপ্রিল মাসে গিয়েছিলাম।

‘এখানে আল আজিরা যে স্টেটমেন্ট দিয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে দিয়েছে। আমি যদি বলি, সেদিন আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে না কোনো সাজা ছিল, না কোনো মামলা ছিল। যে মামলাটা ছিল সেটা থেকে আগেই তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’

এর আগে দেশে নানা মহল থেকেই আল জাজিরার প্রচারিত প্রতিবেদন অল দ্য প্রাইমিনিস্টার'স মেন নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। দেশে সংবাদমাধ্যমগুলোর সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড প্রবিবেদনের গ্রণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তারা একে ‘মন্দ’ বা খারাপ সাংবাদিকতা বলেছে।

তারা বলছে, সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা না মেনে, বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই তথ্যচিত্রটি সম্প্রচার করা হয়েছে।

এডিটরস গিল্ডের মত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো কিছু প্রচার করা হলে তা গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগসহ এর সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনগুলোও প্রতিবাদ জানায়।

এ বিভাগের আরো খবর