রাজধানীর পল্লবীতে ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে সোমবার রাতের প্রথম প্রহরে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
দগ্ধ মো. ফরহাদকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বিবাহবিচ্ছেদ ও বেকারত্ব নিয়ে হতাশায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার জানান, সোমবার রাতের প্রথম প্রহরে এক জন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বলেন, পল্লবীর সি ব্লকের ১১ নম্বর সড়কে এক ব্যক্তি নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন। তিনি অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন।
সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পল্লবী থানা পুলিশকে জানানো হয়। দ্রুত ফরহাদকে উদ্ধার করেন পুলিশ সদস্যরা।
পল্লবী থানার এএসআই ফয়সাল হোসেন সোমবার রাত ৮টার দিকে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ফরহাদকে উদ্ধার করে তার মা ও সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু প্রথমে তারা সাড়া দেননি। পরে তার মাকে জোর করে ডেকে আনা হয়। এর পর উবারে করে তাদের পাঠানো হয় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।’
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে এএসআই ফয়সাল বলেন, পাঁচ বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফরহাদের। তার ২০ বছরের একটি ছেলে ও ১৫ বছরের একটি মেয়ে আছে। তারা মায়ের সঙ্গেই থাকেন। পারিবারিক এসব সমস্যা ও বেকারত্ব থেকে হতাশায় ভুগছিলেন ফরহাদ।
ফরহাদের অবস্থা জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, খোঁজখবর নিতে দুপুরে ফরহাদের মাকে ফোন দেয়া হয়। তিনি জানান, তার ছেলের জ্ঞান ফিরেছে। শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে স্থিতিশীল। তবে বিপদমুক্ত নয়।
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র নার্স শাকিলা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ফরহাদের শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
ফরহাদের মা রওশন আরা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমার পোলার পাঞ্জাবির ব্যবসা আছিল। কল্যাণপুরে ট্রাকের ধাক্কায় এক পা হারানোর পর ওর বউ ছাইড়া যায়।
‘এর পর থেইকাই ট্যাবলেট-টুবলেট খায়। আমি বাসা থেকে বাইর কইরা দেওনের পর মিরপুরে বিহারি ক্যাম্পে থাহে। ডাক্তার ওষুধ-টেস্ট দিছে। কথা কইতে পারে অহন। আমার জীবনডারে শ্যাষ কইরা দিল।’