এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের ‘বড় ভাইকে’ সালাম না দেয়ায় রাজধানীর মুগদায় কিশোর মো. হাসানকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম। জানান, হত্যায় জড়িত সন্দেহে সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বয়স ১৬-১৭ বছরের মধ্যে। কিশোর হওয়ায় তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
মুগদার মান্ডা এলাকায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হাসানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
হাসানের বড় ভাই বেলাল অভিযোগে বলেছিলেন, ‘হাসানকে মান্ডার গলিতে সাত থেকে আট জন মিলে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’
এ ঘটনায় মুগদা থানায় হত্যা মামলা করেছেন হাসানের বাবা আশরাফুল ইসলাম। এই মামলাতেই সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম সংবাদ সম্মেলনে জানান, রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের সালাম না দেয়াকে কেন্দ্র করেই হাসানকে হত্যা।
‘মুগদায় ছোট ভাই বড় ভাইকে সালাম না দেয়ায় ছুরিকাঘাত করে কিশোর হাসানকে হত্যা করে কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা। ওই কিশোর গ্যাঙের নেতৃত্বে ছিল তানভীর। তার সঙ্গে আরও সাত-আট জন জড়িত। তানভীরসহ সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার ভারারা গ্রামে হাসানের বাড়ি। তিনি মুগদা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তৃতীয় হাসান একটি প্রিন্টিং প্রেসে কাজ করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম। ছবি: নিউজবাংলা
যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানান, ‘কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা আবারও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরাও তৎপর রয়েছি। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
‘ঢাকা শহরের নিম্নবিত্ত আয়ের অভিভাবকদের সন্তানেরা এসব কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে জড়িয়ে পড়ে। কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে। পরে ছোট ভাই বড় ভাইকে সালাম দিচ্ছে না, সিগারেট খাচ্ছে ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এসব খুনের ঘটনা ঘটে।’
কিশোর গ্যাং সদস্যদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না- জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ে যদি রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা জড়িত থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা আমরা ইতিমধ্যেই কমিয়ে এনেছি।’