লেখা, কথা বলা এবং ছবি ও কার্টুন আঁকার অপরাধে জেল-জুলুম-হুলিয়া এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে।
শনিবার ‘ওরা আবার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’ ব্যানারে প্রগতিশীল লেখক, কবি, শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন করেন।
আয়োজকদের অভিযোগ, অনুষ্ঠানের শেষদিকে পুলিশ বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, লেখক হাসনাত কাইয়ুম, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, মাহা মির্জাসহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা।
অনুষ্ঠান থেকে কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মোশতাকসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বন্দি লেখক, শিল্পী ও সাধারণ মানুষের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
আনু মুহাম্মদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘নানা আইন দিয়ে মানুষের বাক্স্বাধীনতা ও শিল্প-সংস্কৃতির মুক্ত প্রকাশ রুদ্ধ করা হচ্ছে। রাষ্ট্র একটা বর্বর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। লুটপাট, স্বৈরাচারী মনোবৃত্তির বিরুদ্ধে কথা বললেই জেলে পোরা হচ্ছে মানুষকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো ভিন্নমতকে দমনে মরিয়া শাসকরা। ফলে দেশে গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাত ধরে প্রগতিশীল শক্তিকে যেকোনোভাবে আঘাত করতেই বেশি উৎসাহী এ রাষ্ট্র। এর বিরুদ্ধে গণজাগরণ ছাড়া মানুষের মুক্তি আসবে না।’
বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। রবিউল ইসলাম শশির গান ‘ডিংগা ভাসাও সাহরে সাথীরে’ দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। এরপর নৃত্য পরিবেশন করেন দিলশানা পারুল, কবিতা পাঠ করেন কবি আরিফুজ্জামান তুহিন, রহমান মুফিজ, শোয়াইব হাসান, নূর হোসেন, পথনাট্য পরিবেশন করে বটতলা ও থিয়েটার ৫২, সংগীত পরিবেশন করে বনফুল, সমগিত ও মুকুল।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কবি সৈকত আমীন ও ফেরদৌস আরা রুমী।
আয়োজকদের অন্যতম আরিফ রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রোগ্রাম করছিলাম। সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ এসে আমাদের প্রোগ্রামের লাইটগুলো নিভিয়ে দিয়ে আমাদের তুলে দিয়েছে।’
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন অর রশীদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। তাই পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।