১৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
শুক্রবার সকাল ১০টায় তিনি দেশে ফিরেছেন।
শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রধান ম্যাকনভিলের আমন্ত্রণে ২৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন জেনারেল আজিজ।
সফরকালে দেশটির সেনাপ্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। ঘুরে দেখেন দেশটির সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা ও প্রশিক্ষণ সুবিধাদি।
এরপর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন জেনারেল আজিজ।
সফরকালে অফিস অফ সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স ফর পলিসি সাউথ অ্যান্ড সাউথইস্ট এশিয়া এবং ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশনের প্রতিনিধির সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
বৈঠকে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করেন সেনাবাহিনী প্রধান।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধু হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি রাশেদ চৌধুরীকে দ্রুত বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন জেনারেল আজিজ আহমেদ।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ম্যাকনভিলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় ৯৯ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে সর্বোচ্চ সম্মান দেখিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। আর্লিংটন ন্যাশনাল সেমেটারিতে গার্ড অব অনার প্রদানকালে বাজানো হয় বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত।
সৌজন্য সাক্ষাতে অংশ নেন দুই দেশের সেনাপ্রধান। আলোচনায় দুই দেশের সেনাবাহিনীর বিরাজমান সম্পর্ককে আরও জোরদার এবং পারস্পরিক সহযোগিতার বাড়ানোর লক্ষ্যে আলোচনা করেন।
গত সপ্তাহে সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মিলিটারি অ্যাডভাইজার, আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলদের সঙ্গে এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করেন সেনাপ্রধান।
জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাগত দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। আলোচনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নতুন একটি হেলিকপ্টার ইউনিট মিশন এলাকায় (গাও, মালিতে) মোতায়েনে এবং ডিআর কঙ্গোতে ১৩ সদস্যের একটি মিলিটারি পুলিশ ডিটাচমেন্ট দেয়ায় আহ্বান জানায়।
এছাড়াও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মিশন এলাকায় যেতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ব্যবহার, শান্তিরক্ষা মিশনে মহিলা শান্তিরক্ষীদের অবদান রাখায় ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন মিশন এলাকায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে মতবিনিময় হয়।
জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জোরাল ভূমিকা বাড়ানোর বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী বা ফোর্স কমান্ড পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে সেনাপ্রধানের এ সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।