সিকদার গ্রুপ ও ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল হক সিকদারের মরদেহ শুক্রবার বিকেলে দেশে আনা হয়েছে। রাতে লাশবাহী গাড়িতে করে তার মরদেহ নেয়া হয়েছে ধানমন্ডির বাসায়। বিশিষ্ট এই সমাজসেবকের মরদেহ শনিবার সকালে নেয়া হবে রায়েরবাজার সিকদার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৩০ মিনিটে মারা যান ৯১ বছর বয়সী এই শিল্পপতি।
তার ভাগনে শেখ জহুরুল হোসেন শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, দুবাই থেকে একটি ফ্লাইটে শুক্রবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে জয়নুল হক সিকদারের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছায়। সেখান থেকে নেয়া হয় গুলশান সিকদার মেডিক্যালে। সেখানে যাত্রাবিরতি শেষে রাত ৮টায় ধানমন্ডি ১৫ নম্বরের বাসায় নেয়া হয়। সেখানে সর্বস্তরের লোকজন তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
তিনি জানান, শনিবার জোহরের নামাজের পরে রায়েরবাজারে সিকদার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে জয়নুল হক সিকদারের জানাজা।
শেখ জহুরুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তার মরদেহে এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। মামার (জয়নুল হক) মরদেহ আগামীকাল সকাল ১০টায় রায়েরবাজার সিকদার মেডিক্যালে নেয়া হবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। সেখানে জোহরের নামাজের পরে দুপুর সোয়া একটা থেকে দেড়টার মধ্যে জানাজা হবে।’
মঙ্গলবার দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৩০ মিনিটে মারা যান ৯১ বছর বয়সী এই শিল্পপতি
তিনি বলেন, ‘জানাজা শেষে তার মরদেহ কোথায় দাফন করা হবে, সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শরীয়তপুরের মধুপুরে তার পিতা-মাতার কবরের পাশে অথবা সিকদার মেডিক্যালে দাফন করা হবে। আজ রাতে আমাদের পারিবারিক মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কোথায় তাকে দাফন করা হবে।
‘যেহেতু জয়নুল হকের পরিবারের সবাই এখানে (ঢাকায়) থাকেন, তাই আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি তাকে গ্রামের বাড়ি না ঢাকায় সমাহিত করা হবে।’
জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে জহুরুল বলেন, ‘মামা ঢাকা থেকে দুবাই গিয়েছিলেন ব্যবসায়িক কাজে। সেখানে গিয়ে পাঁচ-সাত দিন তিনি সুস্থ ছিলেন। তিনি সব সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকেন। আমি যতটুকু জানি তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তার পরিবারের সবাই সেখানে ছিলেন।’
বাবা জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুতে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকির মামলায় বিমানবন্দরেই গ্রেপ্তার হন সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার। এর পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে এক মাসের জন্য জামিন পান তিনি।
ধানমন্ডির বাসায় রন সিকদারের আসার ব্যাপারে জানতে চাইলে শেখ জহুরুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাগারাগির মাথায় তাকে একটি মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছিল। আজকে ছুটির দিনে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা দিয়ে তাকে জামিন দিয়েছে স্পেশাল কোর্ট। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি এই বাসায় আসবেন।’