বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে শাহবাগে গণসমাবেশ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২১:৩৩

শুক্রবার বিকেলে প্রগতিশীল ছাত্র, যুব, নারী সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ৯ দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী গণসমবেশ হয়েছে ।

শুক্রবার বিকেলে প্রগতিশীল ছাত্র, যুব, নারী সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

শুরুতে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ধর্ষণবিরেধী গান, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশন করে। এরপর সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্সের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ।

আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘আজকে অনেক নারী নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হিজাব, বোরকা পরছেন। তারা ভাবছেন, এটি পরলে তারা নিরাপদ থাকতে পারবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, হিজাব পরেও নিরাপত্তা আনা যাচ্ছে না। আজকে ঘরের মধ্যেও ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে। ধর্ষণের জন্য ঘর, বাহির, স্থান, সময় বা পোশাক আসল কারণ নয়, আসল কারণ ধর্ষকদের ক্ষমতা।’

তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ একটি যৌন সন্ত্রাস। যারা ধর্ষণের অপরাধে অপরাধী তারা বিভিন্নভাবে ক্ষমতাবান। আর সেই ক্ষমতার জোরে তারা ধর্ষণসহ নারীর প্রতি যৌন নিপীড়ন ঘটান।’

আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের ওয়াজে বলা হয়, ওয়াজের বাইরেও এমনকি রাজনৈতিকভাবে নেতৃত্ব পর্যায়ের লোকজন তাদের মুখেও অনেক সময় আমরা শুনি যে, নারীর পোশাকের জন্যই নারী ধর্ষিত হয়; এই কথা যারা বলে তারা অপরাধী, অপরাধকে আড়াল করতে চায়।’

এ সময় তিনি ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সবাইকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, ‘আমাদের আজকের এই আন্দোলন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। আল জাজিরার প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে যেভাবে সরকার আন্দোলন করছে, সেভাবে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলছে না। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরকার কথা বলবে না, যা করতে হবে, আমাদেরই করতে হবে।’

এ সময় তিনি সবাইকে সারা দেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে নাসীর উদ্দীন প্রিন্স বলেন, ‘গত অক্টোবর মাসে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় আমরা ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ, স্নোগান নিয়ে এই আন্দোলন শুরু করেছি। তখন থেকে এই ছয় মাসব্যাপী সারা দেশে আমরা অব্যাহতভাবে আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করেছি। কিন্তু তারপরও ধর্ষণের মাত্রা কমছে না। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

প্রিন্স বলেন, ‘আইনের রক্ষক থেকে শুরু করে ক্ষমতার সাথে যুক্ত ছাত্র-যুব-আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং তাদের আশ্রয়ে ও প্রশ্রয়ে থাকা সন্ত্রাসীরাই ধর্ষণ নিপীড়নের ঘটনায় যুক্ত বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এরই বিরুদ্ধে আমাদের আজকের সমাবেশ। আমাদের এই আন্দোলন মাত্র শুরু, যতদিন না ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন বন্ধ না হচ্ছে, এই আন্দোলন চলতে থাকবে।’

এ সময় তিনি তাদের ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করলে নারীর জন্য নিরাপদ সমাজ গড়া সম্ভব হবে বলেও মনে করেন প্রিন্স। বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধে ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই।’

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতায় যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, আদিবাসী নারীদের ওপর সব ধরনের যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতন বিরোধী সেল কার্যকর, অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ট্রাইবুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সব মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করা, তদন্তকালে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন বন্ধ এবং ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারীবিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা, সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করা, পর্নোগ্রাফি বন্ধে বিটিআরসির কার্যকর ভূমিকা পালন করা, মাদকব্যবসার হোতাদের গ্রেপ্তার এবং মাদকাসক্তি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা করা।

পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোনো ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করা এবং গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজউল্লাহর সঞ্চালনায় এ সমাবেশে বযুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুদ, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্ট ঢাবির সাধারণ সম্পাদক সালমান সিদ্দিকী ও প্রীতিলতা ব্রিগেডের নারী নেত্রী আসমানি আশাসহ প্রগতিশীল বিভিন্ন ছাত্র-যুব-নারী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর