তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমরা গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। তাই হাইকোর্টের নির্দেশ পেলে আল জাজিরার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তার আগে নয়। হাইকোর্ট যদি আদেশ দেন এটিকে বন্ধ করার জন্য, সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের আদেশ আমাদেরকে মানতে হবে।’
চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ারবাজারে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ কথা জানান তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘চাইলে আল জাজিরার সম্প্রচার দেশে বন্ধ করতে পারতাম। অনেক দেশে বন্ধ করা হয়েছে। প্রতিবেশী ভারতেও কিছুদিনের জন্য বন্ধ ছিল চ্যানেলটি। এখনো ছয় থেকে সাতটি দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ আছে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার যেহেতু গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, তাই এখনও আমরা সে পথে হাঁটিনি।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার যেমন দরকার, দায়িত্বশীলতারও প্রয়োজন আছে। কিন্তু স্বাধীনতা মানে এই নয়, ভুল, মিথ্যা, পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ পরিবেশন করা। এটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। আল জাজিরার রিপোর্ট একটি মিথ্যা বানোয়াট, কিছু কাট পেস্ট করে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।’
করোনা ভ্যাকসিন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালিয়েছেন। তারা প্রথমে বলেছেন, সরকার সময়মতো ভ্যাকসিন আনতে পারবে না। যখন সময়মতো চলে আসল তখন বললেন, এটি নিলে কোনো কাজ হবে না। এই ভ্যাকসিন দিয়ে বিএনপি নেতাদের মেরে ফেলতে চাচ্ছে– এই ধরনের কথাও বলেছেন তারা।
‘নানা প্রশ্ন তুলে দায়িত্বহীন কথা বলে শেষ পর্যন্ত বিএনপির অনেক নেতা করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এখন অনেক বিএনপি নেতা ভ্যাকসিন নেয়ার পক্ষে কথা বলছেন। এ জন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। কথায় আছে না- গাধা জল ঘোলা করে খায়। করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থায় এমনই।’
জিয়াউর রহমানের খেতাব প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আসলে কী ছিল, সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার খেতাব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তো হয়নি এখনও। এটা নিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আলোচনা হয়েছে মাত্র।’
বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি তো বিরোধী দল, তারা বিক্ষোভ করতেই পারে। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনসহ অন্যান্য যে সমস্ত ইস্যুতে তারা বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে, তা হাস্যকর।
‘বাংলাদেশ কিংবা প্রতিবেশী দেশে যে ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় সেই নিরিখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন একটা ভালো নির্বাচন হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, কিন্তু কার্যত মাঠে ছিল না। ভোটের দিন তাদের কাউকে দেখা যায়নি।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নানা বাধ্যবাধকতার কারণে আমাদের দলের এমপি কিংবা মন্ত্রীরা নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিতে পারেননি। মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতারা যারা প্রতিদিন নয়াপল্টনে কথা বলেন, তাদের তো কোনো সমস্যা ছিল না। তারা কিন্তু আসে নাই। অর্থাৎ তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, কিন্তু মাঠে ছিল না। এটি তাদের ব্যর্থতা এবং দলীয় দুর্বলতা। এই কারণেই নির্বাচনে তারা পরাজিত হয়েছে।’