রাজধানীর কলাবাগানে নৌ বাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে করা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমসহ পাঁচ জনের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
বুধবারই মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল। তবে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মবিনুল হক একদিন পর বৃহস্পতিবার মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় জমা দেন এটি।
প্রতিবেদনটি গ্রহণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে আগামী ২১ মার্চ শুনানি হবে।
এই প্রতিবেদন জমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইরফান সেলিমের আইনজীবী প্রাণনাথ। তবে সেখানে কী বলা আছে, সেটি জানার সুযোগ নেই।
অভিযোগপত্রের আসামিদের পাঁচজনের মধ্যে ইরফান সেলিম, দিপু, জাহিদ ও মিজান গ্রেপ্তার রয়েছেন। রিপন নামে একজন পলাতক।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইরফান সেলিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই তাদেরকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।’
গত বছর ২৫ অক্টোবর নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় ইরফান সেলিমের গাড়িটি তাকে ধাক্কা মারে।
ওয়াসিফ খান সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে ইরফানের সঙ্গীরা তাকে কিল-ঘুষি মারেন এবং মেরে ফেলার হুমকি দেন।
এ ঘটনায় ২৬ অক্টোবর সকালে ইরফান সেলিম, তার দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লা, এ বি সিদ্দিক দিপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ আহমদ খান।
সেদিনই ইরফানকে তার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। মদ পান ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে সেদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেদিন থেকেই তিনি বন্দি।
সেদিন দিনভর অভিযানে ইরফানের বাসা থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানানো হয়। তবে এই মামলায় তাকে অব্যাহতি দিয়ে র্যাব আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে। এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনার সধ্যেই প্রথম মামলাটির অভিযোগপত্র জমা পড়ল।
আলোড়ন তোলা এই ঘটনায় ইরফান সেলিম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ হারিয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
ইরফানের পাশাপাশি তার বাবা হাজী সেলিমও বেকায়দায় পড়েছেন। তার বিরুদ্ধে পুরনো দুর্নীতির মামলা সচল হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় দখল করে রাখা সরকারি জমি থেকে তার স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন।