সাতক্ষীরার পাঁচ স্থানে সিরিজ বোমা হামলা মামলায় ১৯ আসামির মধ্যে ১৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলাম বুধবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন।
আসামিদের মধ্যে আট জনকে সর্বোচ্চ ১৩ বছর ও ৯ জনকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। খালাস দেয়া হয়েছে এক জনকে। মৃত্যুতে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে এক জনকে।
দণ্ডিতদের মধ্যে গ্রেপ্তার ১৪ হলেন মনিরুজ্জামান, নুর আলী, গিয়াস উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, হাবিবুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, মুনতাজ, মাহবুবুর রহমান লিটন, রাকিব হোসেন, মনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, আসাদুর রহমান, আনিসুর রহমান, আলমগীর হোসেন ও নাসির উদ্দিন।
পলাতক তিন আসামি হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের ফখরুদ্দিন রাজি, কলারোয়ার পাটুলি গ্রামের নাঈমুদ্দিন ও আসাদুজ্জামান।
খালাস দেয়া হয়েছে আবুল খায়েরকে। এ ছাড়া কারাগারে মৃত্যুবরণ করায় নাসির দফাদারের নাম আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
জেলার পাঁচ স্থানে বোমা হামলার ঘটনায় পুলিশের ছয় মামলার যুক্তিতর্ক মঙ্গলবার শেষ হয়। পরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলাম রায়ের দিন ঘোষণা করেন।
নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) চালানো ওই সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় প্রথমে পাঁচটি মামলা করে পুলিশ। ২০০৭ সালে আরেকটি মামলা করেন সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোহাম্মদ।
এসব মামলায় ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আসামিদের মধ্যে ৯ জন কারাগারে ছিলেন। তাদের মধ্যে বাঁকাল ইসলামপুরের নাসিরুদ্দিন দফাদার ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা কারাগারে মারা যান। ১০ জন জামিনে ছিলেন।
জামিনে থাকা ১০ আসামির মধ্যে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মমতাজউদ্দিন ও নূর আলী ছাড়া অন্যদের গেল মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পিপি আবদুস সামাদ জানান, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট শহরের শহিদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়সহ পাঁচটি স্থানে একযোগে ওই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটে।
ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলীর নাসিরুদ্দিন দফাদারকে আটক করা হয়।
পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাঁটি চিহ্নিত এবং ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০০৬ সালের ১৩ মার্চ সিআইডি পাঁচ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়ার পর তা খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হয়। তবে যথাসময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৭ সালের ২৫ জুন মামলাগুলো আবার সাতক্ষীরার আদালতে ফেরত আসে।
২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে মামলাগুলোর বিচারকাজ শুরু হয়। ২০০৭ সালে করা অন্য মামলাটির বিচারও এ সময় শুরু হয়।