প্যারিস চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন, জলবায়ু অর্থায়ন, কার্বন নিঃসরণ প্রশমন ও অভিযোজন কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের মাধ্যমে একটি সুরক্ষিত ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করে বাংলাদেশ।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বুধবার বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে শ্রম, মানবাধিকার ও স্বাস্থ্য খাতের অগ্রাধিকারসমূহ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন দেশের এ অবস্থানের কথা জানান।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) এ আলোচনায় প্রথম বারের মতো স্বাস্থ্য, শ্রম, কর্মসংস্থান ও মানবাধিকারের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এবং তা মোকাবিলায় সম্ভাব্য করণীয় তুলে ধরা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে শ্রম, মানবাধিকার ও জনস্বাস্থ্য খাত অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
২০১১-১৩ মেয়াদে সিভিএফ সভাপতি হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালনের পর দ্বিতীয় বারের মতো ২০২০-২২ মেয়াদে সভাপতিত্ব করছে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে মোমেন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া কার্যক্রম তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ সম্পর্কেও জানান তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় আর্থিক, প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহায়তা দিতে উন্নত দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেডেরোস আধানম গেব্রিয়েসুস তার বক্তব্যে বিশুদ্ধ বাতাস, স্বচ্ছ ও নিরাপদ পানীয় জল, খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ বাসস্থান ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে পরিবেশগত বিপর্যয় রোধের ওপর জোর দেন।
এ সময় তিনি জলবায়ু পরিবর্তন রোধ, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সংক্রান্ত ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স’ গ্রুপের কো-চেয়ার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে সিভিএফের ভালনারেবিলিটি বিষয়ক থিমেটিক দূত সায়মা ওয়াজেদ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর করোনা মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন।
কর্মসংস্থান, মানবাধিকার ও জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত প্রকট হয়ে দেখা দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি মানসিক স্বাস্থ্যসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সব ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি হ্রাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট সব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
মালদ্বীপের স্পিকার সিভিএফের অ্যাম্বিশন বিষয়ক থিমেটিক দূত মোহাম্মদ নাশিদ, জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক উপহাইকমিশনার নাদা আল-নাশিফ, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার উপমহাপরিচালক মার্থা নিউটনসহ ইথিওপিয়া, ইতালি, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোস্তাফিজুর রহমান।