বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিমেন্টের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা

  •    
  • ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২৩:০৬

আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম অব্যাহতভাবে বাড়ছে। দেশের সিমেন্ট শিল্পমালিকেরা উদ্বিগ্ন। দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকলে দেশে সিমেন্টের দাম বাড়বে।

সিমেন্ট উৎপাদনের মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েই চলছে। প্রতি টন ক্লিংকার আমদানি করতে আগে যেখানে ৪২ মার্কিন ডলার খরচ হতো, এখন সেখানে লাগছে ৪৬ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ প্রতি টন ক্লিংকার আমদানিতে খরচ বেড়েছে ৪ মার্কিন ডলার বা ৯ শতাংশ।

এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বা বিসিএমএ বলেছে, দাম বাড়ার এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশীয় সিমেন্টের দাম বর্তমানের চেয়ে অনেক বাড়বে। ফলে অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি নির্মাণ শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সিমেন্টের দাম সহনীয় রাখতে অতিরিক্ত কর কমানোর দাবি জানিয়েছে বিসিএমএ।

সিমেন্ট তৈরির যে কয়েকটি মূল কাঁচামাল রয়েছে, তার সবগুলোই আমদানিনির্ভর।

পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অবকাঠমো খাতে অনেক বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আরও নতুন নতুন প্রকল্প আসছে। এসব প্রকল্প ঘিরে নির্মাণ খাতের অন্যতম উপকরণ সিমেন্টের চাহিদা বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সিডাব্লিউ রিসার্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সরকারি অবকাঠামো উন্নয়নে সিমেন্টের ব্যবহার ৩৫ শতাংশ। ব্যক্তি উদ্যোগে অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার ৪০ শতাংশ। আবাসন খাতে তা ২৫ শতাংশ।

উদ্যোক্তারা জানান, গত দুই দশকে দেশে সিমেন্টের ব্যবহার বহুগুণ বেড়েছে। ২০০০ সালে মাথাপিছু সিমেন্টের ব্যবহার ছিল ৪৫ কেজি। গত বছরের শেষের দিকে এটি ২০০ কেজি বেড়েছে। ক্রমবর্ধমান বাজারে অবস্থান শক্তিশালী করতে গত কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়েছে।

জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ৩৮টি সিমেন্ট কারখানা সক্রিয়। সিমেন্টের বার্ষিক চাহিদা ৩ কোটি ৫০ লাখ টন। কারখানাগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮ কোটি টন।

উদ্যোক্তারা জানান, সিমেন্ট কারখানাগুলো উৎপাদন সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করতে পারে না।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার মার্কিন ডলারের মধ্যে দুই মার্কিন ডলার বেড়েছে ক্লিংকারের এফওবি অর্থাৎ উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি। বাকি দুই ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে জাহাজ ভাড়ায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে ক্লিংকার তৈরিতে ব্যবহৃত জ্বালানি কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্লিংকারের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। আর চীন হঠাৎ করে কয়লার আমদানি বৃদ্ধি করায় কয়লার দাম অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উৎপাদন পর্যায়ে যেখানে প্রতি টন কয়লার মূল্য ছিল ৪০ থেকে ৪২ মার্কিন ডলার, সেটি এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ মার্কিন ডলারে।

এসব কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সিমেন্টের অন্যতম মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, যার প্রভাব দেশীয় সিমেন্ট খাতেও পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিসিএমএ-এর প্রেসিডেন্ট ও ক্রাউন সিমেন্টের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির বলেন, করোনাপরবর্তী সময়ে অনেক দেশেই আবার নতুন করে উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে। ফলে নির্মাণ সামগ্রীর চাহিদা বিশ্বব্যাপী গত কয়েক মাসে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে সিমেন্ট খাতের যে মূল কয়েকটি কাঁচামাল রয়েছে, তার সবকটিই আমদানি নির্ভর। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশীয় বাজারে প্রস্তুত করা (ফিনিশড) পণ্যের মূল্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

দেশীয় বাজারে সিমেন্ট খাতে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে সামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্যের বাইরে অতিরিক্ত মূল্যে এ পণ্যটি বিক্রি করা সম্ভব নয়। কেবল আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যের ব্যতিক্রম হলেই তার প্রভাব আমাদের দেশে পড়ার সম্ভাবনা থাকে বলে জানান আলমগীর কবির।

বিসিএমএর প্রেসিডেন্ট জানান, ক্লিংকার আমদানিতে কর কাঠামোতে কিছু অসঙ্গতি আছে। তা দূর করতে হবে।

দ্বৈত কর সমন্বয় করা এবং আমদানি পর্যায়ে নির্ধারিত শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকায় নির্ধারণের প্রস্তাব করে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অতিরিক্ত কর কমালে সিমেন্টের দাম সহনীয় হবে পাশাপাশি বাড়বে সরকারের রাজস্ব আদায়।

এ বিভাগের আরো খবর