আদালতের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে শাশুড়ির প্রায় শত কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা ও তার স্ত্রী চার মাস জামিন চাইতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী জানান, অর্থ আত্মসাৎ মামলার দুই আসামি আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রানা ও তার স্ত্রী আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারা তথ্য গোপন করে তিনটি বেঞ্চে জামিন চেয়েছেন। এটি আদালতের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
তিনি আরও জানান, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর আদালতে তাদের জামিন আবেদন খারিজ হয়। ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে তারা প্রথমে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে জামিন আবেদন করেন। সেখানে রুল জারি হয়। পরে তারা আরও একটি বেঞ্চে ফের জামিন আবেদন করেন। সর্বশেষ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদন করেন।
বিষয়টি আদালতের নজরে আসায় জামিন আবেদন খারিজের পাশাপাশি চার মাস জামিন আবেদন করতে পারবে না বলে আদেশ দেয়া হয়।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল।
মামলার বলা হয়, বগুড়ার সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিক শেখ সরিফ উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী দেলওয়ারা বেগম সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের দেখভাল করছিলেন। কিন্তু বয়স ও অসুস্থতার কারণে তিনি বড় মেয়ে ও তার স্বামীকে সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধান ও পরিচালনার জন্য মৌখিক সম্মতি দেন।
পরে মেয়ে ও জামাই ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে স্ট্যাম্প, ব্যাংকের চেক, এফডিআর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র নিয়ে নেন। এ ছাড়া কিছু জাল কাগজপত্র তৈরি করে ব্যাংকের এফডিআর ভেঙে প্রায় ৫০ কোটি টাকা এবং ব্যাংক হিসাব থেকে আরও ৫০ কোটি টাকা আত্মসাত করেন।
গত ৫ অক্টোবর মেয়ে ও জামাইসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দেলওয়ারা বেগম। ১১ অক্টোবর আনোয়ার ও আঞ্জুয়ারাকে আগাম জামিন না দিয়ে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
ওই দম্পতি আত্মসমর্পণের পর জামিন চাইলে ২৫ অক্টোবর বগুড়ার মুখ্য হাকিম আদালত জামিন আবেদন গ্রহণ না করে তাদের কারাগারে পাঠায়।