বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বগুড়ায় সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য ছুরিকাহত, আটক ৭

  •    
  • ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৩:২১

দুই পক্ষের সংঘর্ষে চার জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ১০টি মোটরসাইকেল। ভাঙচুর করা হয়েছে পরিবহনের অফিস। ঘটনায় জড়িত সাত জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বগুড়ার মোটরমালিক গ্রুপের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে চার জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। ছুরিকাঘাত করা হয়েছে এক পুলিশ সদস্যকে। এ ঘটনায় আটক হয়েছে সাত জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়েছে পুলিশ।

সংঘর্ষের সময় রংপুর-বগুড়া মহাসড়ক ও বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে। এতে সড়কে যানজট তৈরি হয়। ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বগুড়ার চারমাথা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বগুড়ার মোটরমালিক গ্রুপের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ছবি: নিউজবাংলা

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মোটরমালিক গ্রুপের সাবেক উপদেষ্টা মঞ্জুরুল আলম মোহন এবং মোটরমালিক গ্রুপের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে উভয় পক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় অন্তত ১০টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়।

চারমাথায় শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়। পুড়ে যায় ওই অফিসের বেশ কিছু আসবাব।

ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

বগুড়া জেলা মোটর মালিক সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে গত তিন বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। এক গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম মোহন। আরেক গ্রুপে আছেন বগুড়া পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম।

তিন বছর আগে বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রপের নির্বাচনে আকতারুজ্জামান ডিউক সভাপতি ও আমিনুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তখন থেকে এই নির্বাচনকে অবৈধ দাবি করে আসছেন মঞ্জুরুল আলম মোহন, যা গড়ায় আদালত পর্যন্ত।

মঞ্জুরুলের দাবি, আদালতের রায় তার পক্ষে এসেছে। রায় বাস্তবায়ন করতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু মানা হচ্ছে না। আমিনুলের নেতৃত্বে প্রতিদিন চাঁদাবাজি করা হচ্ছে।

তিনি আরও দাবি করেন, মঙ্গলবার সকালে তিনি গিয়েছিলেন চাঁদাবাজি বন্ধ করতে। এ খবর পেয়ে আমিনুলের লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের ওপর হামলা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের সামনেই আমিনুল গ্রুপের লোকজন লাঠি মিছিল শুরু করে। এ সময় মঞ্জুরুল গ্রুপের দেড় থেকে দুই হাজার নেতাকর্মী সান্তাহার সড়ক দিয়ে এলজিইডি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আমিনুল গ্রুপের লোকজনকে ধাওয়া করে। এরপর টার্মিনাল এলাকায় দখল নিয়ে ভাঙচুর চালায়।

চারমাথায় শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের কার্যালয়। ছবি: নিউজবাংলা

পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ সঠিক নয় জানিয়ে এসপি আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, ‘সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য ছুরিকাহত হয়েছেন। পুলিশ সাত জনকে আটক করেছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। এরপর রাবার বুলেট ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে পুলিশ সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

বগুড়ার মোটরমালিক গ্রুপের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আনে। ছবি: নিউজবাংলা

শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানে চার জন ভর্তি হন। পরে দুজনকে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) স্থানান্তর করা হয়েছে।

শজিমেকের সহকারী পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ দুজন এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা ছাড়াও আহত আরও পাঁচ জনকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে আমিনুলের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালাহউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মোটরমালিক গ্রুপের বিষয়টি জটিল। আমরা চেষ্টা করছি সংকট সমাধানের। কিন্তু এরই মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটল।’

এ বিভাগের আরো খবর