সোমবার দুপুর ১২টা ১৭ মিনিট। টিকার নিবন্ধন করতে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ক্যাম্পে যান উপজেলার মনির হোসেন সাজিদ। কিন্তু নিবন্ধন বুথে কেউ না থাকায় তিনি যান পাশের বুথে। সেখানে চলছিল টিকাদান।
যারা টিকা দিচ্ছিলেন তারা সাজিদকে বলেন, নিবন্ধন সম্পর্কে জানতে যেতে হবে পৌরসভায়। তাদের কথামতো পৌরসভায় যান তিনি। সেখান থেকে তাকে নিবন্ধনের জন্য সদর উপজেলা কার্যালয়ে যেতে বলা হয়।
তড়িঘড়ি করে সাজিদ ছোটেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে। কিন্তু সেখানেও নিবন্ধনের জন্য কোনো বুথের দেখা পাননি তিনি। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে হতাশ সাজিদ বিষয়টি জানান সংবাদকর্মীদের।
সংবাদকর্মীরা বিষয়টি জেলা প্রশাসক (ডিসি) পারভেজ হাসানের নজরে আনেন। মোবাইল ফোনে সব শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন ডিসি। বলেন, ‘হাসপাতালেই তো চলছে নিবন্ধন কার্যক্রম। সেখানে যান, সব ব্যবস্থা করছি।’
এরপর হাসপাতালে যান সাজিদ। এর মধ্যে কেটে যায় ৪৯ মিনিট। ঠিক ১টা ৬ মিনিটে এক নারী সেই বুথে এসেই তড়িঘড়ি করে ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ বের করেন, শুরু করেন তালিকাভুক্তির কাজ। নিবন্ধন শেষে টিকা কার্ডের কপি পেয়ে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন সাজিদ।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি সচেতন নাগরিক হয়েও কতটা ভোগান্তির শিকার হলাম। যারা লেখাপড়া জানে না তারা কতটা বিড়ম্বনায় পড়ছে- তা বোঝার আর বাকি রইল না। এতে টিকা নিতে আগ্রহ হারাবে সাধারণ মানুষ।’
সাজিদের মতো অনেকেই সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে করোনা টিকা ক্যাম্পে গিয়ে অন স্পট রেজিস্ট্রেশন সেবা নিতে এমন বিড়ম্বনার শিকার হন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চার ঘণ্টা পর বুথে আসা রিভা আক্তার নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সকালেই বুথে আসার কোনো নির্দেশনা ছিল না, তাই আসিনি। এখন আসতে বলেছে তাই এসেছি।’
সদর হাসপতালের করোনা টিকাদান ক্যাম্পের সমন্বয়ক আমির হোসেন বলেন, ‘আমরা জানতাম এখানকার নিবন্ধন বুথে নিবন্ধন করা হবে। কিন্তু সকাল থেকে বুথে কেউই ছিল না। নিবন্ধন করতে এসে অনেককেই ফিরে যেতে দেখেছি। যারা জানতে চেয়েছে তাদের উপজেলায় যেতে বলে দিয়েছি।’
জেলায় ৩৬ হাজার ডোজ করোনাভাইরাসে টিকা গেছে ২৯ জানুয়ারি। সোমবার পর্যন্ত নিবন্ধন করেছে ২ হাজার ৯৩৪ জন, টিকা নিয়েছেন ২৬০ জন।
রোববার জেলায় ১৪১ জন করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬৭ জন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত টিকাদান চলার কথা রয়েছে।