বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী ক্রমাগত করোনার টিকাবিরোধী বক্তব্য দিয়ে আসার মধ্যেই টিকা নিলেন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী দলের যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন।
সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে টিকার প্রথম ডোজ নেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল থেকে আমি টিকা নিয়েছি।’
বিএনপির অন্য কোনো নেতা টিকা নিয়েছেন জানতে তিনি বলে, ‘আমি কারোটাই জানি না।’
বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী খোকন টিকা দেয়ার সময় নার্সকে বলেন, ‘সুচ আস্তে আস্তে ফুটায়েন, ব্যথা পাবো না তো।’
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছোটকাল থেকেই আমি ইনজেকশন নিযে ভয় পেতাম। তাই টিকা নেওয়ার আগেই নার্সকে বলে নিয়েছি।
খোকন নোয়াখালী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। সেই সঙ্গে তিনি উচ্চ আদালতে তার নেত্রীর পক্ষে আইনি লড়াই চালান। দলের অন্যতম যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
বিএনপির হয়ে তার টিকা দানের বিষয়টি মুখরোচক আলোচনা তৈরি করেছে এ কারণে যে, তার দলের পক্ষ থেকে ক্রমাগত টিকাবিরোধী বক্তব্য আসছে।
বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভীর দাবি, ভারতের টিকা নিরাপদ নয়। তিনি এমনও বলেছেন, এই টিকা দিয়ে মানুষ মারা যাবে। তার আরও একটি বক্তব্য বেশ আলোচনা তৈরি করেছে। তিনি বলেছেন, ‘সরকার ভ্যাকসিন দিয়ে বিএনপিকে মেরে ফেলতে চায়।’
খোকন যেদিন টিকা নিয়েছেন, সেদিনও তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কথা ঠিক। ভারত থেকে যে টিকা এসেছে, তা নির্ভুল নয়, এটি ত্রুটিপূর্ণ।’
খোকনকে বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে স্মরণ করালে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক দেশের টিকা সে সকল দেশের প্রধানমন্ত্রী আগে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী আগে নেন নাই। আমরা এরই সমালোচনা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা টিকা নিয়ে দুর্নীতির বিরোধিতা করেছি। ভারত থেকে চার ডলারে টিকা নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাঁচ ডলার করে দেয়া হয়েছে। তাতে করে বেক্সিমকোর মাধ্যমে এক ডলার বেশি নিয়েছে। এতে রাষ্ট্রের টাকা অপচয় হয়েছে।’
বাংলাদেশ সিরাম থেকে যে টিকা নিয়েছে, সে টিকার মধ্যস্ততা করেছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে সিরামের লোকাল এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে।
বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী টিকা দেশে আসার পর তারা এগুলো গুদামজাত করবে, সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে পাশাপাশি জেলায় জেলায় পৌঁছে দেবে। এর বিনিময়েই তারা এক ডলার করে পাবে।
চু্ক্তি অনুযায়ী কোনো টিকায় কোনো সমস্যা হলে এই প্রতিষ্ঠানটিকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
আবার বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছ, সিরামের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে ভারত যে দামে টিকা পাবে, বাংলাদেশও পাবে সেই দামেই। তবে ভারত যদি চার ডলারের বেশিতে কেনে, তাহলে বাংলাদেশ দাম দেবে চার ডলার।
টিকা নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে বিএনপি নেতা খোকন গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বলেন, ‘ইনজেকশনের স্থানে সামান্য একটু ব্যথা ছাড়া আপাতত আর কোনো সমস্যা অনুভব করছি না।’
টিকা নিয়ে দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে নিয়মিত কাজ করেছেন বলেও জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী।