বাংলাদেশে বিপন্ন শকুন রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গবাদিপশুর ব্যথানাশক কিটোপ্রোফেন-জাতীয় ওষুধের উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছে সরকার।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এ প্রস্তাবে সায় দেয় মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিসভা বৈঠক-পরবর্তী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, দেশে খুবই উদ্বেগজনক হারে শকুনের সংখ্যা কমছে। সত্তরের দিকে দেশে ৫০ হাজারের মত শকুন ছিল, এখন আছে মাত্র ২৬০টি। তাও অনেকগুলো গুরুতর অসুস্থ।
শকুন যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে পুরো দেশের মধ্যে যে পরিমাণ মৃত পশু-পাখি থাকে, সেগুলো তো পরিবেশ নষ্ট করে, শকুন না থাকলে তা থেকে রোগজীবাণু ছড়ায়।
শকুনের কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে কিটোপ্রোফেনকে দায়ী করছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গবাদিপশুর মধ্যে কিটোপ্রোফেন-জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। সেই পশু মারা গেলে তার মাংস শকুন খেলে শকুন মারা যায়।
আনোয়ারুল জানান, ফার্মাসিটিক্যালস, ড্রাগ কোম্পানি ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় কিটোপ্রোফেন উৎপাদন বন্ধ করতে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব নিয়ে আসে। এতে বলা হয়, কিটোপ্রোফেন বন্ধ না হলে শকুন এদেশে বাঁচবে না।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অন্যতম একটা শকুন উপজীব্য হিসেবে কাজ করে জানিয়ে আনোয়ারুল বলেন, সেজন্য তারা (মন্ত্রণালয়) বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা, সভা-সিম্পোজিয়াম করে সিদ্ধান্তে এসেছে এটা বন্ধ করতে হবে।
কিটোপ্রোফেন-জাতীয় ওষুধ বন্ধ করে বিকল্প হিসেবে মেলোক্সিক্যাম (Meloxicam) নামে একটি ওষুধ ব্যবহারে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় পরামর্শ দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বিকল্প ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম জানিয়ে তিনি বলেন, এটা ব্যবহার করলে শকুন বা অন্যান্য পাখির ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না, লাইফ রিস্ক হবে না, মন্ত্রিসভা এটাও অনুমোদন করেছে।
দেশের ল্যাবরেটরিতে মেলোক্সিক্যাম পরীক্ষা করা হয়েছে বলেও জানান আনোয়ারুল। বলেন, এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, ওষুধটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ওটা (কিটোপ্রোফেন) তুলে নিলে কোনো ক্ষতি হবে না।