লেপের আরামে শীতের সকালের আলস্য উপভোগের সময় ফুরিয়ে এলো! অন্তত আবহাওয়া অফিস তেমন কথাই বলছে। হিসাব-নিকাশ কষে তারা জানিয়েছে, আর দুইদিন! এরপর থেকেই বাড়তে থাকবে তাপমাত্রা।
বাংলা ঋতুচক্রে মাঘ শেষ হয়ে ফাল্গুন আসতে বাকি আছে আরও ছয় দিন। সে হিসাবে ফাল্গুনের আমুদে ঠান্ডার দিকে যাচ্ছে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে সামনে আর কোনো শৈত্যপ্রবাহ অপেক্ষা করে নেই।
মৃদু শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা থাকে আট থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে থাকে ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে তাপমাত্রা ছয়ের নিচে নেমে যায়।
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘বোরবার রাত থেকে তাপমাত্রা কিছুটা নেমে আসবে। সেক্ষেত্রে দেশের দুই-তিন জায়গায় তাপমাত্রা দশের নিচে নামতে পারে। তবে এর স্থায়িত্ব দুদিনের বেশি হবে না। বড় ধরনের আর কোনো শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই।’
এর ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ কয়েকটি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলেও জানান তিনি। তাই উত্তরাঞ্চলবাসীকে আরও কয়েক দিন ঠান্ডা সইতে হবে। এরপর আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে তাপমাত্রা।
গত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস দেখলে অন্তত বোঝা যাবে শীতের হাওয়া এখন ফাগুন হাওয়ায় পরিণত হয়েছে। রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৩০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন সিলেটের শ্রীমঙ্গলে ১০ দমশিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামান্য বৃষ্টির কথা বলা হয়েছে রংপুর ও দিনাজপুরে সঙ্গে যশোরে।
শনিবার রাত থেকে খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরায় বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।
বাংলা লোককথায় বলে, মাঘে আর মেঘে দেখা হলে ঠাণ্ডার প্রকোপ বেড়ে যায়। আবহাওয়া অফিসও বলছে সেই কথা। বৃষ্টির কারণে ওইসব অঞ্চলে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। তবে সেটা খুব বেশি তীব্র নয়। এই বৃষ্টি রোববারের মধ্যে শেষ। আর হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
রুহুল কুদ্দুস বলেন, এবার বর্ষার শুরু থেকেই পূবালি বায়ুর আধিক্য ছিল। আরব অঞ্চল থেকে দেশের আকাশে মেঘ ঢুকেছে। দেশের পূর্বাঞ্চলে বিশেষ করে, সিলেট-কুমিল্লা অঞ্চলে একটা লঘুচাপ থেকে গেছে, যার ফলে এবার আওহাওয়ায় একটা বড় তারতম্য ঘটেছে। শীতেও সেটার প্রভাব রয়ে গেছে।
এবার পৌষে তেমন শীত পড়েনি। সেটার কারণ ছিল পূবালি বায়ুর আধিক্য। পৌষ মাস জুড়ে বড় ধরনের কোনো শৈত্যপ্রবাহ দেখেনি রাজধানীবাসী। দিনের তাপমাত্রা ছিল গড়ে ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে স্থানভেদে এক থেকে ছয় ডিগ্রি বেশি ছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের রোববারের পুর্বাভাসও বলছে লঘুচাপের কথা। উপমাহাদেশের উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আর লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
তবে এখনও বৃষ্টির আশংকা উড়িয়ে দেয়নি আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় হতে পারে বৃষ্টি। আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। সঙ্গে মাঝারি কুয়াশা।