সিলেটের মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ তৃতীয়বার পেছানো হয়েছে।
বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে মামলার বাদীর করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার সকালে সাক্ষ্য গ্রহণের কথা ছিল।
সে অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হকের আদালতে মামলার আসামিদের হাজির করা হয়। তবে বাদীপক্ষ কোনো সাক্ষী হাজির করেনি। এতে সাক্ষ্য গ্রহণ মুলতবি করেন বিচারক।
তবে এখন পর্যন্ত পরবর্তী তারিখ দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন এই আদালতের সরকারপক্ষের কৌঁসুলি সাঈদা খানম।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ৫১ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে। রোববার মামলার বাদীসহ পাঁচজনের সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল।
এর আগে গত ২৪ ও ২৭ জানুয়ারি নির্ধারিত তারিখে সাক্ষী হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।
এদিকে বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে করা আবেদনের ওপর রোববার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
৩ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫২৬ ধারায় হাইকোর্টে আবেদন করেন এই মামলার বাদী।
এ ব্যাপারে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাদী ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে বিচারিক আদালত পরিবর্তনের আবেদন করেছেন। আবেদনে সিলেটের অন্য কোনো ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলাটি যেন বদলির আদেশ দেয়া হয়, সে প্রার্থনা করা হয়েছে।
‘রোববার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু হাইকোর্টে বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের গঠিত বেঞ্চ আজ আদেশ দিবেন।’
গত ১৭ জানুয়ারি ধর্ষণ মামলার অভিযোগ গঠন করে আদালত। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আবুল কাশেমের আদালতে ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ও মাহফুজুরকে ধর্ষণে সহায়তা করতে অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিতি।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন ধর্ষণের শিকার নারী। এ সময় ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্র তাকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর ও গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী সেদিন (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে শাহপরান থানায় মামলা করেন। এজাহারভুক্ত আসামি করা হয় ছয় জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিন জনকে আসামি করা হয়।