বাংলাদেশকে নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বিমানবন্দর থানার ওসি বদলিতে ঘুষ লেনদেন নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাকে অসার বলেছে বিসিএস উত্তীর্ণ পুলিশ কর্মকর্তাদের সমিতি ‘পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’।
তারা বলছে, যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেটি মনগড়া, উদ্দেশ্যমূলক। পুলিশের বদলি সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা থাকলে এটি তুলত না গণমাধ্যমটি।
গত সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেলে আল জাজিরায় সম্প্রচার করা হয় ‘গ্যাং ক্লোজ টু বাংলাদেশ পিএম এক্সট্র্যাক্টস ব্রাইবস ফর স্টেট কন্ট্রাক্টস’ নামের প্রতিবেদনটি।
এতে দাবি করা হয়, বিমানবন্দর থানার ওসি হিসেবে বদলির জন্য হাঙ্গেরিতে অবস্থানকারী একজন ঘুষ লেনদেনের দাবি করেছেন। বলেছেন, এই টাকার ভাগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ প্রধান, ডিএমপি কমিশনারকে দিতে হবে। বাকি টাকা তিনি নেবেন।
তবে যার বক্তব্য দেয়া হয়েছে, তাকেই আবার আল জাজিরা সাইকোপ্যাথ বা মানসিক ভারসাম্যহীন বলেছে।
শুক্রবার পুলিশ সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদলিপিতে পুলিশের বদলিপ্রক্রিয়া নিয়ে আল জাজিরার কোনো ধারণা আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, আল জাজিরার প্রতিবেদনে জনৈক ব্যক্তির বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার মহোদয়গণ কর্তৃক উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে ওসি পদায়নের কথা উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু ওসি পদায়নের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন।
ডিএমপি কমিশনার প্রসঙ্গে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান পুলিশ কমিশনার একজন দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে সুপরিচিত। তিনি পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদানের পরপরই থানায় আগত সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন এবং যথাযথ আইনি সেবা পান সে লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সেক্ষেত্রে থানায় ওসি বদলি বা পদায়নে উৎকোচ গ্রহণের প্রসঙ্গের অবতারণা বাতুলতামাত্র। এতে প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশ পুলিশের অত্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে উক্ত ব্যক্তির কোনো ধারণাই নেই। এ ধরনের বক্তব্য তার কল্পনাপ্রসূত এবং বানোয়াট।’
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘যখন ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের উপযোগী করে বাংলাদেশ পুলিশকে গড়ে তোলা হচ্ছে, তখন একটি মহলের এ ধরনের দুরভিসন্ধিমূলক প্রতিবেদন প্রচার অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত।’
ভিডিওর বক্তব্য কারসাজি নাকি, সে প্রশ্নও তুলেছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এতে বলা হয়, ‘ওই ব্যক্তি আদৌ এ ধরনের বক্তব্য প্রদান করেছেন নাকি কাট, কপি ও পেস্ট করে এ বক্তব্য তৈরি করা হয়েছে, সে সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবৎ বিদেশে অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থানের কারণে বর্তমান প্রজন্মের পুলিশিং এবং পুলিশের কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে তার কোনো স্বচ্ছ ধারণা নেই।
‘উপরন্তু বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান প্রজন্মের অফিসারদের সঙ্গে তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। সাক্ষাৎকারে পুলিশ সম্পর্কে তার প্রদত্ত বক্তব্য কল্পনানির্ভর মর্মে প্রতীয়মান হয়।’