বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইমরান এইচ সরকার কোথায়?

  •    
  • ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১২:৩২

বর্তমানে অনেকটা আড়ালেই থাকছেন ইমরান এইচ সরকার। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নেই। তবে সামাজিক কাজে যুক্ত রয়েছেন।

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে গড়ে উঠেছিল শাহবাগ আন্দোলন। ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ নামে লাখ লাখ মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত টানা বিক্ষোভের সবচেয়ে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন এক তরুণ চিকিৎসক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ইমরান এইচ সরকার।

প্রায় শূন্য থেকে হঠাৎ করে পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসেন এই তরুণ। কিন্তু আট বছর পর একপ্রকার দৃষ্টির আড়ালে চলে গেছেন তিনি। কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এখন আর তাকে দেখা যায় না।

গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন ‘নিজের রাজনৈতিক দল হতে পারে’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। সময়ের পরিক্রমায় তা-ও গতি হারিয়েছে।

শাহবাগের ওই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত নাম হয়ে উঠেছিলেন ইমরান এইচ সরকার, যদিও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিতর্কও কম তৈরি হয়নি। রাজনৈতিক মহলে সে সময় অনেকেই ভাবতে শুরু করেন রাজনীতিতে ‘লম্বা রেসের ঘোড়া’ হতে পারেন ইমরান এইচ সরকার।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মোটরগাড়ি মার্কায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জাতীয় রাজনীতির দিকে ঝোঁকার কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। ভোট পেয়েছিলেন ২ হাজার ৭৭৫টি। ফলাফল প্রকাশের আগে আগে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইমরান এইচ সরকার ওই নির্বাচনের সমালোচনা করে একে ‘ভোট ডাকাতির নির্বাচন’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা রাজধানী শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে অংশগ্রহণ ছিল সর্বস্তরের জনগণের। ফাইল ছবি

২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের মেয়ে নন্দিতার সঙ্গে বিয়ে হয় ইমরান এইচ সরকারের। ২০১৮ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর তিনি আর বিয়ে করেননি। গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হওয়ার আগে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ছিলেন। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে অনেকটা আড়ালেই থাকছেন ইমরান এইচ সরকার। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নেই। তবে সামাজিক কাজে যুক্ত রয়েছেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তিনি দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন রাজধানীর ধানমন্ডিতে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়া খুব একটা সক্রিয়তা দেখা যায় না তার।

নিউজবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘এখন ওভাবে কোনো কর্মসূচি নিইনি। করোনার শুরুতে মেডিক্যাল টিম নিয়ে বের হতাম। ওইটাও এখন কমে গেছে। ওই মেডিক্যাল টিম এখন বন্ধ রেখেছি। আর এমনিতে কোনো পাবলিক প্রোগ্রামে যাই না এখন।’

ইমরান এইচ সরকার ছিলেন এই আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র। ফাইল ছবি

রাজনৈতিক দল করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক দল করার ঘোষণা দিইনি কখনো। তবে আমি বলেছিলাম, যে দলগুলো রয়েছে, তার হয়ে আমি হয়তো কখনো কাজ করব না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইমরান এইচ সরকারের এক ঘনিষ্ঠ গণজাগরণ মঞ্চ কর্মী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে উঠেছিল বাম ও সরকারপন্থি বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে। এ ছাড়া ব্লগার, অনলাইন অ্যাকটিভিস্টসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ কারণে ইমরাম এইচ সরকার নিজে থেকে দল গঠনের ঘোষণা দিলে কেউ তার সঙ্গে থাকেননি।’

তবে তার রাজনৈতিক দল গঠনের সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি বলে উল্লেখ করেন ওই কর্মী।

গণজাগরণ মঞ্চের অপর এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ইমরান এইচ সরকার দল গঠনের ঘোষণা দিলেও এটা বাস্তবায়ন করা তার জন্য কঠিন ছিল। কারণ, তার নিজস্ব কোনো কর্মী ছিল না। তা ছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠন গড়ে উঠলেও তারা ইমরান এইচ সরকারের কর্মী ছিল না কেউ। এ কারণে তিনি দল গঠনে ব্যর্থ হয়েছেন বলে আমি মনে করি।’

এই আন্দোলনের ‘স্লোগানকন্যা’ হয়ে ওঠেন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তার। ফাইল ছবি

গণজাগরণ মঞ্চের ‘স্লোগানকন্যা’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লাকী আক্তার সে সময়ের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা থেকে গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে জনগণের কাছে প্রহসন মনে হয়েছে। অপরাধীর প্রাপ্য সাজা অপরাধীকে দেয়া হয়নি বলেই মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল। সে কারণেই আমরা শুরু থেকেই বলেছি, প্রহসনের এই রায় মানি না।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে গণজাগরণ মঞ্চ অনেক আশার সঞ্চার করেছিল। সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন এলাকায় সফলভাবে গণজাগরণ মঞ্চ গঠন করেছিল। তবে এর বিরদ্ধে প্রথম থেকেই অপপ্রচার চলেছে। এখনো চলছে। শুধু শাহবাগকেন্দ্রিক না হয়ে আমাদের ভাবনাগুলো যদি আমরা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারতাম, শ্রমিক-কৃষকদের সংযুক্ত করে এগিয়ে যেতে পারতাম, তাহলে হয়তো এটার চিত্র ভিন্ন হতে পারত।’

এ বিভাগের আরো খবর