বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সরকারি স্কুলের জায়গায় মাদ্রাসা নির্মাণের অভিযোগ

  •    
  • ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২২:১৪

প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে সরকারি অনুমতি ছাড়াই মাদ্রাসাটি গড়ে তোলা হয়েছে বলে স্বীকার করেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিয়া মো. তুহিন। বলেন, ‘দানের জমিতে মাদ্রাসা গড়েছি। তবে সরকারি অনুমতি নেইনি।’

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে মাদ্রাসা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকার সুযোগে মাদ্রাসাটির তিনতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। চতুর্থতলার নির্মাণ চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দালান ঘেঁষে রয়েছে সেই মিরপুর মুহিউস্‌ সুন্নাহ্ মাদ্‌রাসা। কার অনুমতি নিয়ে মাদ্রাসাটি নির্মাণ করা হয়েছে, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, অনেক বছর আগে মীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে টিনের চালা ও বাঁশের বেড়া দিয়ে একটি মক্তব গড়ে তোলা হয়েছিল। সকালে স্থানীয় শিশুরা এসে মক্তবে কোরআন শিখত। তবে করোনার সময়ে সেখানে তিনতলা মাদ্রাসাভবন নির্মাণ করা হয়েছে। চারতলা নির্মাণ চলছে।

অভিযোগ রয়েছে, মীরপুর গ্রামের একদল লোক মাদ্রাসাটি নির্মাণের সময় স্কুলের জায়গা দখল করেন। তারা সরকারি অনুমতি নেননি। বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে টাকা তুলে মাদ্রাসাভবন নির্মাণের খরচ জোগানো হয়।

তাদের জায়গা দখল করে মাদ্রাসাভবন নির্মাণের বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা বলেন, ‘আমাদের কেউ জিজ্ঞেস করেনি। করোনাকালে স্কুল বন্ধ ছিল। তখন স্কুলের জায়গায় মাদ্রাসাটি গড়ে তোলা হয়।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে মাদ্রাসা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে

বিষয়টি নিয়ে মীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শেখ বাতেন বলেন, ‘আমার বাবা আবদুল হান্নান বিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেছেন। বিদ্যালয়টি ভালোই চলছিল। তবে করোনাকালে বিদ্যালয়ের পাশ ঘেঁষেই একটি তিনতলা মাদ্রাসাভবন তোলা হয়। সরকারি অনুমতি না নিয়ে সরকারি স্কুলের জায়গা দখল করে কীভাবে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলো?’

জানা গেছে, স্কুল নির্মাণের জন্য ওই এলাকার শেখ আবদুল হান্নান, শেখ আবদুল লতিফ, শেখ আবুল খায়ের ও শেখ তোতা মিয়া ১৯৭২ সালে ৩৩ শতক জায়গা তৎকালীন জেলা প্রশাসক বরাবর দান করেন।

জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে ১৯৭৩ সালে মিরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়।

১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়ের নামে খারিজ খতিয়ান সৃজন করা হয়। সব কাগজপত্র বিদ্যালয়ের নামে থাকার পরও সুকৌশলে বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে মাদ্রাসাভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু ও সে সময়ে মীরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবদুর রহিম প্রকাশ মিলন মিয়া উপস্থিত থেকে মাদ্রাসার নতুন চারতলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে সরকারি অনুমতি ছাড়াই মাদ্রাসাটি গড়ে তোলা হয়েছে বলে স্বীকার করেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিয়া মো. তুহিন। বলেন, ‘দানের জমিতে মাদ্রাসা গড়েছি। তবে সরকারি অনুমতি নেইনি।’

কেন অনুমতি নেননি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টা ভালো বলতে পারবেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফেরদৌস।

জানতে চাইলে ফেরদৌস নিউজবাংলাকে বলেন, ষাট দশকে এখানে মক্তব ছিল। এখানে মাদ্রাসানির্মাণ করা হয়েছে। স্কুলের জায়গা দখল করা হয়নি। মাদ্রাসার জায়গাতেই মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যারা এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন, তারা ভুল করে অভিযোগ দিয়েছেন। কারণ মাদ্রাসা রাতের আঁধারে করা হয়নি।

তবে মাদ্রাসার পক্ষে কোনো অনুমতিপত্র কিংবা ভূমির মালিকানার কোনো দলিলপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

সরকারি অনুমতি ছাড়া মাদ্রাসানির্মাণের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর