মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন হয়ে যাবে বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটি মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশকে হাল ছেড়ে না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রদূর সচিবালয়ে দেখা করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
২০১৭ সালের আগস্টে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে ছুটে আসা লাখো রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়ায় চীন যুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ যখন আশা দেখছে, তখন নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। গত সোমবার ভোটে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে আবার ক্ষমতা দখল করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
এতে প্রত্যাবাসনপ্রক্রিয়া আবার আটকে যায় বলে আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে। যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে দেশটিতে সেনাশাসন থাকার সময়ও দুবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হয়েছিল।
বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার একাধিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে। তবে তারা কথা রাখেনি। তবে গত মাসে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। এতে প্রত্যাবাসন নিয়ে জটিলতা অবসানের আশা করা হয়।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা কিছুটা সংকটময় হয়ে উঠেছে। কিন্তু তাতে আমাদের হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আমাদের একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।’
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশের পাশে আছে বলেও জানান তিনি।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশের সংকটটা যুক্তরাষ্ট্র বোঝে জানিয়ে মিলার বলেন, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ঠিক আগের মতোই থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, রোহিঙ্গাদের সংকট মিয়ানমার থেকে শুরু হয়েছিল এবং তাদের ওখানে শেষ করতে হবে। এজন্য তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারকে ভূমিকা নিতে হবে।’
সচিবালয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারের সাক্ষাৎ
বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেয়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র সব সময় মনে রাখবে বলেও জানান তিনি।
মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থান এই অঞ্চলের গণতন্ত্রের জন্য একটি ক্ষত হিসেবেও দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।
মিলার বলেন, ‘বিগত বছরগুলো থেকে আমরা দেখে আসছি মিয়ানমারে এ ধরনের অবস্থা জারি রয়েছে। তারপরও আমরা আশা করি একটি সুন্দর সমাধান সেখানে হবে।’